উজ্জ্বল অধিকারী: সিরাজগঞ্জের বেলকুচির আলোচিত ওসি গোলাম মোস্তফার অবশেষে বদলী হয়েছে। রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি অফিস থেকে তাকে পাবনায় বদলী করা হয়।
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম তার বদলীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তার স্থলাভিষক্ত এখনও কেউ হয়নি। গত দু’দিন থেকে বেলকুচিতে দেখা যায়নি তাকে। পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত রয়েছেন। পুলিশের
নীতিমালা অনুযায়ী কোন কর্মকর্তা কোন জেলায় ছয় বছরের অধিক সময় অবস্থান করতে না পারলেও ইন্সপেক্টর মোস্তফার ক্ষেত্রে তার ব্যাতিক্রম হয়েছে। দশ
বছরের অধিক সময় ধরে সিরাজগঞ্জে অবস্থান করলেও আদেশে ‘রুটিন বদলী’ উল্লেখ রয়েছে।
এদিকে, আসামী পক্ষ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে বাদীর মামলা রেকর্ডে গড়িমশি,পরে মামলা রেকর্ড হলেও মূল আসামী বাদ দিয়ে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়ে কৌশলে মামলার মেরিট নষ্ট করতেন ওসি গোলাম মোস্তফা। মামলা করেও বিচারপ্রার্থীরা উপযুক্ত বিচার না পেয়ে অনেকই বেলকুচিা পুলিশের প্রতিক্ষুদ্ধ ও অসন্তুষ্ট ছিলেন। উর্ধ্বতনরা জেনেও এসব আমলে নেননি বলেও অভিযোগ রয়েছে। এসব ভুক্তভোগীদের মধ্যে বেলকুচির আলহাজ সিদ্দীক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেদী মাসুদ, ভাঙ্গবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম ভুইয়া, প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের ও পত্রিকার এজেন্টপুত্র নবিন মন্ডলের নাম উল্লেখযোগ্য।
অন্যদিকে, বেলকুচির রাজাপুরের রান্ধুনী বাজারের প্রকাশ্যে দিবালোকে খুন হওয়া যুবদল নেতা আকবর আলী ও মাইঝাইল গ্রামে গৃহবধু সামিয়া খাতুন খুনের
মামলা দু’টির তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক নুর আলম ও ইন্সপেক্টর আসলাম উদ্দিনের সাথে ঝামেলায় জড়ান ওসি। মামলা দু’টি পরে ডিবিতে গেলে উর্ধ্বতনদের কান ভারী করে ওই দু’তদন্তকারীকে অন্যত্র বদলী করেন ওসি।
এদিকে, ওসি মোস্তফার বিতর্কীত কর্মকান্ড নিয়ে একাদিক গণমাধ্যমে নিউজ প্রকাশিত হয়। বেলকুচির পত্রিকার এজেন্ট পুত্র নাবিন মন্ডলকে মারধোরের মামলা রেকর্ডে গড়িমসি, পরবর্তীতে আর্থিক সুবিধা নিয়ে ঢাকার মন্ডল গ্রুপের জিএম প্রকৌশলী আমিনুল ইসলামসহ প্রধান চার আসামী চার্জশিট থেকে বাদ দেবার ইস্যু নিয়েও কঠোর সমালোচিত হন ওসি গোলাম মোস্তফা। এসব নিয়েও সংবাদ প্রকাশ হয়। যেকারনে ওসি গোলাম মোস্তফা নিজে থেকেই তদবীর করে বেলকুচি থেকে অন্যত্র সটকে পড়ে।
পত্রিকার এজেন্ট দৌলত মন্ডল বলেন, ‘যাবার আগে আসামীপক্ষ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ঢাকার মন্ডল গ্রুপের জিএম প্রকৌশলী আমিনুল ইসলামসহ ৪ প্রধান
আসামী বাদ রেখে চার্জশিট দিয়ে ছেলের মারধোরের মামলার মেরিটই নষ্ট করে গেলেন ওসি গোলাম মোস্তফা।’ এজেন্টপুত্র নাবিন মন্ডল জানান, ‘বিতর্কীত
চার্জশিটের বিরুদ্ধে পুলিশ সদর দপ্তরেও আমরা লিখিত অভিযোগ দিচ্ছি।’
আসামীপক্ষের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা গ্রহনের অভিযোগ অস্বীকার করে ওসি গোলাম মোস্তফা নিজ মুঠোফোনে বলেন, ‘সরকারী কর্মকর্তার বদলীর বিষয়টি
স্বাভাবিক। একজন যাবেন, আর আরেকজন আসবেন। এমন তো চলতেই থাকবে।
সংবাদটি শেয়ার করুন।
Copyright © 2024 সংবাদের আলো. All rights reserved.