বেলকুচিতে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার ঘটনায় প্রধান আসামীকে বাদ দিয়ে চার্জশিট
উজ্জ্বল অধিকারী: সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে পত্রিকার এজেন্ট ব্যবসায়ী পুত্রের উপর হামলা মামলায় মূল আসামীদের বাদ দিয়ে পুলিশ চার্জশিট দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মামলার বাদী নাবিন মন্ডলের অভিযোগ, পুলিশের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণর কারণে মামলায় প্রধান আসামি ঢাকার মন্ডল গ্রুপের জিএম ও স্থানীয় এমপি মমিন মন্ডলের ঘনিষ্ঠ সহচর ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল ইসলাম ও বেলকুচি পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি আকতার হামিদসহ মূল চারজনকে চার্জশিট থেকে বাদ দিয়ে আদালত বরাবর সুপারিশ পাঠিয়েছে। তবে মামলায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি শাহাদত হোসেন মুন্না, ইয়াসিন আলী, সবুজ, হয়রত আলী, মাসুদ, সৌরভ, আলমাছ, আসাদুল ও সোলেয়মান সহ ৯ জনকে অভিযুক্ত করে গত ৩০ জুন আদালতে চার্জশীট জমা দেয় পুলিশ।
তিনি বলেন, ‘জমা প্রদানের পর থেকে চার্জশীট সুকৌশলে নজরবন্দী রাখায় সেটি দেখা সম্ভব হয়নি। ঈদের ছুটি শেষে কোর্ট ইন্সপেক্টর মোস্তফা কামাল রোববার অফিসে আসেন। অতঃপর দুপুরে তা দেখার সুযোগ মেলে। মুল চার আসামীই বাদ দেবার বিষয়টিও নিশ্চিত হন বাদী।’
বাদী নাবিন মন্ডল আরও বলেন, ‘গত ১০ জুন সন্ধায় আমাকে মারপীটের ঘটনার পর রাতে আমার বাবা যখন বেলকুচি থানায় যান তখনই ওসি সাহেব ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল, পৌর ছাত্রলীগের আকবায়ক আকতার হামিদ, সজিব আহম্মেদ ও হাকিম মন্ডলের নাম বাদ দেবার জন্য পিড়াপিড়ি করেন। বাবা রাজি না হওয়ায় মামলা নিতে গড়িমশি করে পুলিশ। ঘটনার চারদিন পর মামলা হলেও জখমের গ্রীভিয়াস সনদ আদালতে পৌঁছাতেও পুলিশের গড়িমশিতে ওই চারজন বাদে সকল আসামীই জামিন পান। তদন্তে এসে স্বাক্ষীর বক্তব্য ও আলামত গ্রহণেও নানা কৌশল ও টালবাহানা করে পুলিশ। পুলিশ শেষ পর্যন্ত ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল ইসলামসহ মূল চারজনকে বাদ দিবে, তা আগে থেকেই আমরা আশঙ্কা করেছিলাম। আগামী ২৪ জুলাই এ মামলার পরবর্তী দিন ধার্য রয়েছে। আইনজীবির মাধ্যমে আমি নারাজি দেবার প্রক্রিয়া করবো।’
বাদীর বাবা পত্রিকার এজেন্ট দৌলত মন্ডল বলেন, ‘বেলকুচি থানা পুলিশ যে শুধু আমার ছেলের বেলায় এ ধরনের রহস্যজনক আচরণ করেছে তা নয়। আলহাজ সিদ্দিকী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেদী মাসুদ এবং ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জহুরুল ভুইয়া ও প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের লাঞ্ছিতের ঘটনায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অভিযুক্ত হলেও একই ধরনের নাটকীয়তার আশ্রয় নেন পুলিশ। আমার ছেলেকে মারপীটের এজাহারে স্বাক্ষী জামাল উদ্দিন বাপ্পী, রিপন চক্রবর্তী, রুবেল তালুকদার, অলিফ সরকার, মোখলেছুর রহমান রতন এবং চেয়ারম্যান মির্জা সোলেয়মান স্ত্রী স্বীকৃতি বেগমের নাম রয়েছে। তারা গত ৩০ জুন সুস্পষ্টভাবে সকলের উপস্থিতিতে স্বাক্ষ্য দিলেও রহস্যজনক সেসব বাদ দেয়া হয়েছে। বেলকুচি থানা পুলিশের এসব অনৈতিক ও গড়িমশির বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের আইজিপি মহোদয়ের কমপ্লেইন শাখায় অভিযোগ দেবার কথাও ভাবছি।’
বেলকুচি থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নিয়ামুল হকের মুঠোফোনে রোববার দুপুরে বার বার রিং করেও রিসিভ করেননি। অন্যদিকে, ওসি গোলাম মোস্তফা জানান, ‘তদন্ত ও স্বাক্ষ্যগ্রহন শেষে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় ৪ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া, ৯ জনকে অভিযুক্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।