বেলকুচিতে যমুনায় বিলীন হলো বিদ্যালয় ভবন !
উজ্জ্বল অধিকারী, বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: যমুনা নদীতে তীব্র স্রোতের তোড়ে এবার বিলীন হলো সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ক্ষিদ্রচাপড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন। স্কুল হারিয়ে হতাশায় শিক্ষার্থীরা। আর বসতভিটা নদীগর্ভে চলে যাওয়ায় অসহায় যমুনাপারের বাসিন্দারা। রোববার দুপুরের দিকে বিদ্যালয়ের পূর্বাংশের দুটি কক্ষ নদীতে চলে যায়। বাকি অংশটুকুও যে কোনো সময় চলে যেতে পারে নদীগর্ভে।
এদিকে নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন এবং ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণকাজে গাফিলতির কারণেই এই ভাঙন ত্বরান্বিত হয় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ক্ষিদ্রচাপড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফরিদ আহম্মেদ নয়ন বলেন, যমুনা চরের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সন্তানদের শিক্ষার আলো দিতে ১৯৪০ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ১৪২ জন। আর শিক্ষক-শিক্ষিকা চারজন। ২০০৮ সালে প্রায় ৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ে একাডেমিক ভবন কাম বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়। তবে এ বছর বর্ষার শুরু থেকে বিদ্যালয় ভবনটি নদীভাঙনে হুমকির মুখে পড়ে। ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণে বিভিন্ন জায়গায় আবেদন দিয়েও শেষ রক্ষা হলো না। বিদ্যালয়ে পাঠদান করার মতো আর কিছু রইল না। তবে ৯ জুলাই পর্যন্ত বিদ্যালয়ে ঈদের ছুটি রয়েছে। খোলার পর স্কুলের পশ্চিম পাশে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান শুরু হবে। জরুরি ভিত্তিতে যদি কিছু অবকাঠামোর ব্যবস্থা হয়, তাহলে হয়তো শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে পারবে।
জানা যায়, ১৩ মে বেলকুচির মেহেরনগর থেকে চৌহালীর এনায়েতপুর স্পার বাঁধ পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার এলাকা রক্ষায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে ৯৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করা হয়। তবে যমুনায় পানিবৃদ্ধির কারণে জিও ব্যাগ নিক্ষেপ বন্ধ থাকায় ভাঙনের তীব্রতা দেখা দেয়। এ বছর বর্ষার শুরুতে বেশ দূরেই ছিল নদী। কিছু জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়েছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হলো না।
এছাড়া টানা ভাঙনের কবলে পড়ে ক্ষিদ্রচাপড়ীসহ আশপাশের এলাকার অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বড়ধুল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সুজন সরকার বলেন, যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে আমরা ঘরবাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হারাচ্ছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি সূত্র জানিয়েছে, যমুনায় পানি কমলে আবারও পুরোদমে প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।