বেলকুচিতে কাজ না করে প্রকল্পের টাকা পকেটে
উজ্জ্বল অধিকারী: সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নে ও পৌর এলাকায় গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির (টি আর) কর্মসুচির আওতায় প্রকল্পের কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে প্রকল্প কমিটির সভাপতি ওই প্রকল্পের টাকা নয়ছয় করেছেন।
বেলকুচি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে উপজেলার নির্বাচনী এলাকায় গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির ১১টি প্রকল্পে ১৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নে ও পৌর এলাকায় ২টি প্রকল্পে বরাদ্দ করা হয় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এই দু’টি প্রকল্পের কাজের সভাপতি রাতুল (রকি)। নাম মাত্র কাজ করে বাকি টাকা পকেটে রেখেছেন স্থানীয়দের এমটাই দাবি।
সরেজমিন দেখা যায়, বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের আমিরুল ইসলামের বাড়ি হইতে মৃত ইনসাব আলীর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের প্রকল্পে কোন মতে পাঁচ গাড়ি বালু ফেলে কাজ শেষ করেছে। এ ছাড়াও পৌর এলাকায় কলেজ হাট হইতে অবদা বাঁধ পর্যন্ত রাস্তার মেরামত এই প্রকল্পের অধীন ১২০ মিটার রাস্তায় করার কথা থাকলেও ২০ মিটারের মত কোন রকম উভয় পাশ থেকে মাটি কেটে পায়ে হাটার মত রাস্তা করা হয়েছে। পাঁচ দিন কাজ করিয়ে তাঁদের মাত্র ২০ হাজার টাকা বিল দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের সুর্বনসাড়া গ্রামের হয়রত আলী জানান, আমিরুল ইসলামের বাড়ি থেকে মৃত ইনসাব আলীর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মানের জন্য ১ লাখ টাকা গ্রামীণ অবকাঠামো প্রকল্প থেকে বরাদ্দ হয়। কিন্তু স্থানীয়দের মাধ্যমে কাজ না দিয়ে কোথায় থেকে রাতুল নামের একজনকে কমিটির সভাপতি বানিয়েছেন। সে কাজ না করে টাকা পকেটে তুলেছেন।
উপজেলার পৌর মুকুন্দগাঁতী এলাকার নাম প্রকাশ না করায় অনিচ্ছুক ব্যক্তি জানান, কলেজ হাট হতে ওয়াবদা বাঁধ পর্যন্ত রাস্তা মেরামতের জন্য ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। ১২০ মিটার রাস্তা করার কথা থাকলেও ২০ মিটার রাস্তায় কোন রকম উভয় পাশ থেকে মাটি কেটে পায়ে হাটার মত রাস্তা করা হয়েছে।
ওই দুটি প্রকল্পের সভাপতি রাতুল (রকি) বলেন, আমিরুল ইসলামের বাড়ি হইতে মৃত ইনসাব আলীর বাড়ির রাস্তার মেরামতের কাজ শেষ। কিন্তু কলেজ হাট হতে অবদা বাঁধ পর্যন্ত কিছুটা কাজ করেছি জায়গার সমস্যার জন্য বাকি কাজ করতে পারি নাই। তবে জায়গার সমস্যা শেষ হলে বাকিটুকু কাজ করে দেবো।
এ বিষয়ে বেলকুচি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) রাশেদুল ইসলামের কাছে প্রকল্পের কাজের বিষয়ে প্রতিবেদক জানতে গেলে তিনি সাথে সাথে স্থানীয় সংসদ সদস্যর পিএসকে ফোন দিয়ে প্রকল্পের কাজের বিষয়ে চাপ দেন। সবাই যেনে গেছে এ দু’টি কাজ করতেই হবে ফোনে এ সব কথা বলেন। তিনি জানান, প্রকল্পের কাজ চলো মান আছে। বিল উত্তোলন হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের সদুত্তর দেননি তিনি।
বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আনিসুর রহমান বলেন, প্রকল্প দু’টি আমি সরজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করবো। কাজ না করে বিল উত্তোলনের কোন সুযোগ নেই।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।