বেলকুচিতে কাজী নজরুল ইসলামের ৪৬ তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
উজ্জ্বল অধিকারী: সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৬ তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২৯শে আগস্ট রোজ সোমবার বিকাল ৫ ঘটিকার সময় সোহাগপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানটি বেলকুচি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মুস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও নজরুল একাডেমী বেলকুচি উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হানিফ মোহাম্মদ এর সঞ্চালনায় অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, বেলকুচি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ তাজমিলুর রহমান, বেলকুচি প্রেসক্লাবের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব সাইদুর রহমান, বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক সরকার, সোহাগপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ নজরুল ইসলাম, এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন মির্জা শরিফুল ইসলাম শরিফ, আব্দুর রউফ মোঃ শাহাদৎ হোসেন, নাজমুল হাসান, বিমল কুমার সরকার, এস এম রেজা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, শোষিত-নিপীড়িত মানুষের বঞ্চনার ক্ষোভ দীপ্ত শিখার মতো জ্বলে উঠেছিল যার কণ্ঠে, সাম্প্রদায়িকতার পরিবর্তে অসাম্প্রদায়িকতা তথা মানবতার বাণী শুনিয়েছিলেন যিনি- সেই কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ এবং সৈনিক। দারিদ্র্যের কারণে মাত্র ১০ বছর বয়সেই পরিবারের ভার বহন করতে হয়েছে তাকে। ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কিছুদিন কাজ করার পর পেশা হিসাবে বেছে নেন সাংবাদিকতা।
সাম্রাজ্যবাদবিরোধী এ কবি তৎকালীন ভারতবর্ষে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সোচ্চার ভূমিকা রাখেন। কারাবন্দি থাকা অবস্থায় তিনি রচনা করেন ‘রাজবন্দীর জবানবন্দী’। বন্দিদশায় তার হাতে সৃষ্টি হয়েছে গান, কবিতা, প্রবন্ধ, গল্প, উপন্যাস, ছোট গল্পসহ অসংখ্য রচনা।
১৯৭২ সালের ২৪ মে স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভারত সরকারের অনুমতি নিয়ে কবি নজরুলকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। তাকে দেয়া হয় জাতীয় কবির মর্যাদা। বাংলা সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কবিকে সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ সরকার কবিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়। একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি একুশে পদে ভূষিত করা হয় কবিকে।
১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ অবিভক্ত বাংলার বর্ধমান জেলার চুরুলিয়ায় যে কবির আবির্ভাব ঘটেছিল ‘জ্যৈষ্ঠের ঝড়’ হয়ে; সে ঝড় চিরতরে থেমে গিয়েছিল ঢাকার পিজি হাসপাতালের (বর্তমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) কেবিনে, ১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ ভাদ্রে। অঙ্কের হিসাবে তার জীবনকাল ৭৭ বছরের, তবে সৃষ্টিশীল ছিলেন মাত্র ২৩ বছর। নজরুলের এই ২৩ বছরের সাহিত্যজীবনের সৃষ্টিকর্ম বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।