বেলকুচিতে আলােচিত নাবিল হামলা মামলার প্রতিবেদন জমা দিলাে পিবিআই
উজ্জ্বল অধিকারী: সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে বহুল আলােচিত পত্রিকার এজেন্টের ছেলে নাবিল মন্ডলের উপর সন্ত্রাসী হামলায় মামলার প্রতিবেদন আদালতে জমা দিলেন পিবিআই। অনেক নাটকীয়তার পর অবশেষে আলাের মুখ দেখতে যাচ্ছে বেলকুচির আলােচিত নাবিল মন্ডলের মামলাটি।
গত বছর ১০ জুন বেলকুচির চালা আদালত ভবনের সামনে শাফিন কনফেকশনারীতে বসে থাকা অবস্থায় সস্ত্রাসীদের হামলার স্বীকার হন উপজেলায় সকল পত্রিকার এজেন্ট দৌলত মন্ডলের পুত্র নাবিন মন্ডল। হামলার পর উপজেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে, পরে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিলেও মামলা নিতে গরিমসি করেন তৎকালিন ওসি। পরে সাংবাদিকদের অনুরােধে মামলা নিলেও মূল আসামীর নাম বাদ দিয়ে প্রতিবেদন জমা দেন সেই ওসি গােলাম মােস্তফা। বাদি না রাজি দিলে মামলাটি ডিবিতে পাঠিয়ে দেন আদালত। তার এক সপ্তাহ পরে ডিবি মামলাটি ফেরত দিলে আদালত আবার গত বছরের ৮ আগষ্ট পিবিআইকে তদন্তের দ্বায়িত্ব দেন।
মামলার বাদী নাবিন মন্ডল বলেন, আমি নাকি তাদের ফেসবুক শেয়ার দিয়েছি। এজন্য গত জুন মাসের ১০ তারিখে আমি আমার দােকানে শাফিন কনফেকশনারীতে বসে আছি। এমন সময় স্থানীয় এমপি’র লােকজন ও মন্ডল গ্রুপের জিএম বে-আইনী দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র সজ্জিত হয়ে আমার দােকানে এসে মন্ডল গ্রুপের জিএম ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল ইসলামসহ সকল আসামীগণ আমার নাম ধরিয়া ডাকাডাকি ও গালিগালাজ করতে থাকে। তখন আমি দােকানের ভেতর হতে আসামীদের ডাকে সাড়া দিলে ইঞ্জিনিয়ার আমিনুলের হুকুমে পরে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক শাহাদত হােসেন মুন্না আমাকে হত্যার উদ্দেশ্য আমার মাথা বরাবর স্বজােরে আঘাত করলে আমি উক্ত আঘাত হতে বাঁচার চেষ্টা করে সড়ে গেলে উক্ত আঘাত আমার গলার ডান পার্শ্বে লেগে গুরুতর কাটা রক্তাত্ব জখম হয়। এসময় সৌরভ নামে আরেক সন্ত্রাসী একটি কাটার দিয়ে আমার ডান গালে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। এ ছাড়াও ইয়াছিন, আকতার হােসেন, হযরত আলী, হাকিম মন্ডল , সবুজ, মাসুদ, আলমাছ, সাকিবুর রহমান সজিব, আসাদুল ইসলাম মল্লিক ও সােলায়মান তাদের হাতে থাকা হাতুড়ী, লােহার রড ও বাশেঁর লাঠি ইত্যাদি দ্বারা আমার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে ছেলা ফুলা জখম করে ও সকল আসামীগণ আমাকে বিভিন্ন প্রকার হুমকি প্রদান করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। স্থানীয়রা আমার চিৎকারে এগিয়ে এসে আমাকে উদ্ধার করে প্রথমে বেলকুচি উপজলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে স্থানীয় এমপি ডাক্তারদের নিষেধ করে দেয়ায় আমি চিকিৎসা না পেয়ে পরবর্তিতে আমাকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করান। পরে আমি সুস্থ হয়ে গিয়ে থানায় মামলা করতে গেলে ততকালিন ওসি আমার মামলা নিতে রাজি হয়না। অনেক ঘােরাঘুরির পর সাংবাদিকদের অনুরােধে মামলা নিলেও মূল আসামীদের নাম প্রতিবেদন থেকে কেটে দেয়। আমি নারাজি দিলে আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের দ্বায়িত্ব দেন। তবে এখন পর্যন্ত আমি জানতে পারলাম না যে আমি ফেসবুকে কি পােষ্ট শেয়ার করেছিলাম।
পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সােহেল রানা বলেন, গত বছরের ৮ আগষ্ট এই মামলাটি আদালত আমাদের কাছে তদন্তের জন্য দিলে আমি মামলাটি আমার সার্বিক তদন্ত প্রাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণ, জখমীর জখম পর্যবেক্ষণ সহ চিকিৎসার সনদপত্র পর্যালােচনা, প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীর সাক্ষ্য মােতাবেক বিজ্ঞ আদালত গ্রহণকৃত জবানবন্দি এবং ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় উল্লেখ করে প্রতিবদন জমা দিয়েছি।
সিরাজগঞ্জ আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মােস্তফা কামাল বলেন, আজ ১৯ জানুয়ারী পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সােহেল রানা মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছ আমার নিকট। এই প্রতিবদনে আসামীরা হলেন, ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল ইসলাম (৪২), মােঃ শাহাদত হােসন মুন্না (৪২), মােঃ ইয়াছিন (৩২), মাোঃ আকতার হােসেন (২৮), মাোঃ হযরত আলী (২৬), মাোঃ সৌরভ (৩২), মােঃ সবুজ (৩২), মােঃ আলমাছ (৩০) মােঃ সাকিবুর রহমান সজিব (২৮), মােঃ আসাদুল ইসলাম মল্লিক (২৮), মােঃ সােলায়মান (২৮), এদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রাথমিকভাবে সত্য বলিয়া প্রমাণিত হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে।
তবে সাংবাদিকগন ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল ইসলামের সাথে কথা বলার জন্য বারবার যােগাযােগ করার চেষ্টা করলেও তিনি তার ব্যবহ্নত ফােনটি রিসিভ করননি।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।