বিয়ে করতে ভয় পাচ্ছেন? আপনি গ্যামোফোবিয়ায় আক্রান্ত নয়তো
সংবাদের আলো ডেস্ক: লক্ষ্য করে দেখুন, প্রায় প্রতিদিনই আপনার পরিচিত কিংবা আশপাশের কারো না কারো বিয়ে হচ্ছে। আবার এমনও চোখে পড়বে যিনি বা যারা বিয়ে করতে ভয় পান। অর্থাৎ নানাবিধ কারণে তিনি বা তারা অন্য কারোর সঙ্গে সারাজীবন কাটানোর মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। সিদ্ধান্ত নিতে না পারা, বিয়ে করতে ভয় পাওয়া সাধারণ কোনো বিষয় নয়। রোগবিদ্যা বলছে এটি অসুখ; এর নাম গ্যামোফোবিয়া।
গ্রিক শব্দ গ্যামো অর্থ বিয়ে ও ফোবিয়া অর্থ ভয়। গ্যামোফোবিয়া হলো বিয়েতে ভয়। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কাছে বৈবাহিক সম্পর্ককে হুমকিস্বরূপ মনে হয়। তারা মনে করেন বিয়ে করলে তাদের স্বাভাবিক জীবন মারাত্মকভাবে বাঁধাগ্রস্ত হবে। নতুন মানুষের সঙ্গে বসবাস ও মানিয়ে চলাকেও তারা সহজভাবে নিতে পারেন না। এমনকি বিয়ের কথা শুনলেই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে যান।
গ্যামোফোবিয়ার কারণ:
১. অতীতের আঘাত, অতীতের সম্পর্কের নেতিবাচক অভিজ্ঞতা, অবিশ্বাস বা বেদনাদায়ক বিচ্ছেদের কারণে অনেকে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পান।
২. ব্যক্তির পারিবারিক ইতিহাসে যদি অস্বাস্থ্যকর সম্পর্ক, বিচ্ছেদ ও এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলেও বিয়ে ভীতি হতে পারে।
৩. ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যও গ্যামোফোবিয়ার কারণ হতে পারে। যেমন অনেকে স্বাভাবিকভাবেই খুব উদ্বিগ্ন থাকেন, আবার তারা প্রচুর স্বাধীনতা চান। এ ধরনের ব্যক্তিরা মনে করেন বিয়ে করলে স্বাধীনভাবে, নিজের ইচ্ছেমতো বাঁচা যাবে না। তাই বিয়ে ভীতিতে ভীত হন।
৪. সাংস্কৃতিক বা সামাজিক চাপ যেমন বিয়ের বিষয়ে সামাজিক প্রত্যাশা, চাপ, উদ্বেগও ভয়ের কারণ হতে পারে।
যেসব লক্ষণ দেখে বুঝবেন আপনি এ রোগে আক্রান্ত: আপনার মধ্যে যদি কাউকে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার ভয় কাজ করে, একজনের সঙ্গে জীবন কাটাতে হবে এ ভয়ে যদি সম্পর্ক থেকে পালাতে চান, বিয়ের পর স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হবে ভেবে ভয় পান, সম্পর্ককে উদ্বেগ ও বিষণ্নতার কারণ মনে করেন তাহলে আপনি গ্যামোফোবিয়ায় আক্রান্ত। ভয় ও উদ্বেগ থেকে হৃদস্পন্দন বেড়ে যেতে পারে, ঘাম, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি হতে পারে।
গ্যামোফোবিয়া কাটিয়ে ওঠার উপায়: গ্যামোফোবিয়া থেকে মুক্তি পেতে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন। বিশেষজ্ঞ ছাড়া পাড়া-প্রতিবেশি কিংবা বন্ধুদের কাউন্সেলিং নিলে যথেষ্ট হবে না। বিশেষজ্ঞরা কগনিটিভ-বিহেভিয়ারাল থেরাপি বা সিবিটি দিয়ে থাকেন। এছাড়াও আপনার রোগের তীব্রতা বোঝে চিকিৎসা দেবেন। এর পাশাপাশি মেডিটেশন, ব্যায়াম ইত্যাদি চালিয়ে যেতে পারেন। গ্যামোফোবিয়ায় আক্রান্তদের কোনো গ্রুপ থাকলে সেখানে যুক্ত হতে পারেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যেখানে একই ধরনের ভয়ের কথা অনেকে শেয়ার করেন, পাশাপাশি ভয় কাটিয়ে ওঠার পরামর্শ পাওয়া যায়, সেখান থেকে উপকার পাওয়া যেতে পারে। সঙ্গী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভয় ও উদ্বেগ নিয়ে খোলাখুলি কথা বলুন।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।