সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জ সদরে বিএনপির কর্মী আব্দুল বারী সেখকে (৬২) কুপিয়ে হত্যার ১৮ দিন পার হলেও নামিক ১৫ আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এ নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা৷ তবে পুলিশের ভাষ্য, আসামি ধরতে মাঠে কাজ করছেন তারা।
গত ১৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে উপজেলার বহুলী বাজার এলাকায় এই চাঞ্চল্যকর হত্যার ঘটনা ঘটে। পরের দিন নিহতের ছেলে জাকির হোসেন ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে আরও ১০ থেকে ১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। নিহত আব্দুল বারী ওই বাজার এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা বলেন, হত্যাকাণ্ডের ১৮ দিন পার হয়ে গেলেও মূল আসামী নূরনবী, নজরুল ইসলাম, মোকাদ্দেস হোসেন ও এসএম রঞ্জু এখনও অধরা। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।
মামলার বাদী জাকির হোসেন বলেন, আমার বাবাকে তো আর ফিরে পাবো না। কিন্তু এই হত্যার মূল আসামিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জোড় দাবি জানান তিনি।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, আসামিদের সঙ্গে বিএনপি কর্মী আব্দুল বারী সেখের জমি সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতে মামলা চলছিল। এই মামলার জেরে তারা বিভিন্ন সময়ে আব্দুল বারীকে মারপিট ও হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। এরই এক পর্যায়ে গত ১৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় আব্দুল বারী তার নিজ বাড়ী থেকে বের হয়ে বহুলী বাজারে যাওয়ার পথে আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে লাঠি, রামদা, হকিস্টিক ও দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে পথরোধ করে এলোপাথাড়িভাবে মারপিট শুরু করে। এতে ১৭ নং আসামি এসএম রঞ্জু হুকুম দেয় যে, এই শালার জীবন শেষ করিয়া দে। এই হুকুমে ১নং আসামি নূরনবী তার হাতে থাকা ধারালো রামদা দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আব্দুর বারীর মাথার বাম ও ডান পাশে পরপর দুটি কোপ দেয়। এ আঘাতে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরবর্তীতে ২নং আসামি নজরুল ইসলাম এসএস পাইপ ও ৫নং আসামি মোকাদ্দেস হোসেন হাতুড়ি দিয়ে রক্তাক্ত মাথায় আঘাত করে আশপাশে থাকা লোকজনকে হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে সিএনজি যোগে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেয়। কিন্তু সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
এই হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বহুলী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাইদার আলী। তিনি বলেন, আব্দুর বারী সেখ তৃণমূল বিএনপির একজন কর্মী ছিলেন। তার পুরো পরিবারই বিএনপি সমর্থিত। আমরা এই হত্যার দ্রুত বিচার চাই।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, ওই হত্যার ঘটনায় ইতিমধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলাটির তদন্ত এখনও চলমান। আমরা আসামি গ্রেফতারে জোরালো ভাবেই কাজ করছি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহিন মিয়া বলেন, এ মামলায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান
সংবাদটি শেয়ার করুন।
Copyright © 2025 সংবাদের আলো. All rights reserved.