উজ্জ্বল অধিকারী: ১০ ডিসেম্বর রবিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমপ্লেক্সে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বিজনেস ক্লাবের অষ্টম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত ফ্রেশার্স রিসিপশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শাহ্ আজম। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ক্লাবের সভাপতি জনাব পৃথ্বিরাজ প্রধান এবং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ সৌম।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও তরুণ শিক্ষার্থীসহ দুই শতাধিক সুধী অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে নবীন ছাত্রদের সম্মাননা স্মারক, সার্টিফিকেট ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয় এবং কেক কেটে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানটি উদযাপন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শাহ্ আজম বলেন, বাংলাদেশের কৃষিনির্ভর অর্থনীতি পরিবর্তিত হয়ে এখন অনেকটাই নির্ভর করে উৎপাদন এবং সেবা শিল্পের উপর। এই ইন্ডাস্ট্রিগুলোর উন্নয়ন বহুলাংশে নির্ভর করে উপযুক্ত জনসম্পদের সহজলভ্যতার ওপর। উৎপাদন শিল্প এবং সেবা শিল্পের উন্নয়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে সুযোগ্য জনসম্পদ তৈরি ও সরবরাহ করতে পারলেই এ উন্নয়ন অর্থবহ হবে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যারা প্রচলিত ধারায় ব্যবসায় শিক্ষা গ্রহণ করেছেন, তারা মেধাকে অনেকটাই শাণিত এবং ব্যবসায়ের তাত্ত্বিকজ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হন; কিন্তু কর্মপোযোগী পরিবেশে নিজেকে মেলে ধরার মতো পেশাগত যোগ্যতার ঘাটতি থাকে।
তাদের বাস্তবভিত্তিক প্রশিক্ষণ ও জ্ঞানার্জনের পরিবেশ সৃষ্টিতে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সমর্থ্য হচ্ছে না। তিনি বলেন, এই সংকটটি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব, যদি আমরা আমাদের গ্রাজুয়েটদের উপযুক্ত ইন্টার্নশিপ এর সুযোগ তৈরি করে দিতে পারি। এটি দুঃখজনক যে, বাংলাদেশে ইন্টার্নশিপের সুযোগ অনেকটাই কম এবং ঢাকার বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পক্ষে শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করে দেওয়া আরও কঠিন। ফলে অনেক শিক্ষার্থী এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন।
উপাচার্য শাহ্ আজম বলেন, দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যদি ইন্টার্নশিপ করার সুযোগটি সৃষ্টি করা যায়; তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েটদের প্রত্যেকেই পর্যাপ্ত সুযোগ পাবে। এক্ষেত্রে যদি ইন্টার্নশিপ সংক্রান্ত জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন করা যায় এবং এর বাধ্যবাধকতায় প্রতিষ্ঠানগুলোতে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষার্থীর ইন্টার্নশিপ সুবিধা নিশ্চিত হয়, তাহলেই আমাদের ইন্ডাস্ট্রির যে চাহিদা, সেই চাহিদা অনুযায়ী জনসম্পদ সৃষ্টি এবং সরবরাহ করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সক্ষম হবে। শিক্ষার্থীদের পেশাগত দক্ষতার উন্নয়নের জন্য যদি সহশিক্ষামূলক কার্যক্রমকে বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত করা যায়, তাহলে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশের যে স্বপ্ন দেখেছেন এবং বাংলাদেশ যে লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, তা অর্জন করা সম্ভব হবে।
যতদিন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই সুযোগ-সুবিধাগুলো অন্তর্ভুক্ত না করা হবে, ততদিন পর্যন্ত আমাদের এটি অনানুষ্ঠানিকভাবেই অর্জন করতে হবে। সেক্ষেত্রে উপাচার্য মহোদয় শিক্ষার্থীদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান, যেভাবে শিক্ষার্থীরা বিজনেস ক্লাব, ডিবেটিং ক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনে নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করে সামনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নিজেদের গড়ে তুলছেন, তা প্রশংসনীয়।
এভাবেই তাদেরকে আরও এগিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বিজনেস ক্লাবের অবদান তাৎপর্যপূর্ণ বলে তিনি মন্তব্য করেন। উপাচার্য মহোদয় ক্লাবের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করে সকল নবীন ক্লাব মেম্বারদের অভিষিক্ত করার মাধ্যমে তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।
সংবাদটি শেয়ার করুন।
Copyright © 2024 সংবাদের আলো. All rights reserved.