আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বাংলাদেশকে তিস্তার নদীর পানির হিস্যা দেওয়া সম্ভব নয় বলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জ্জী। সোমবার মোদিকে লেখা এক চিঠিতে এ বিষয়টি জানান মমতা। চিঠিতে মমতা উল্লেখ করেছেন, রাজ্যের মানুষকে বঞ্চিত করে বাংলাদেশকে তিস্তার পানি দেওয়া সম্ভব নয়। মমতা লিখেছেন, ‘আমি জানতে পেরেছি, ভারত সরকার ১৯৯৬ সালের ইন্দো বাংলাদেশ ফারাক্কা চুক্তি যেটি ২০২৬ সালে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা, নবায়ণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে পানিবণ্টনের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। আপনি নিশ্চই অবগত আছেন যে, ফারাক্কা দিয়ে যাওয়া পানি কলকাতা বন্দরের নাব্যতা রক্ষায় এবং পশ্চিমবঙ্গের মানুষের জীবন জীবিকা পরিচালনায় এর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে।’ মোদিকে লেখা চিঠিতে মমতা আরও লিখেছেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে তিস্তার পানিবণ্টন নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সিকিমে বেশ কয়েকটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি, বন উজার হওয়া এবং জলবায়ূ পরিবর্তনের ফলে তিস্তার অবস্থাও খুব একটা ভালো নয়।
ধারণা করা হচ্ছে, বৈঠকে ভারত সরকার বাংলাদেশে তিস্তা প্রকল্পের জন্য একটি দ্বিরাষ্ট্রীয় সহযোগীতার কথা প্রস্তাব করেছে। আমি অত্যন্ত বিস্মিত হয়েছি, জল শক্তি মন্ত্রণালয় তিস্তার ভারত অংশের সংস্কারে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। বাংলাদেশের সঙ্গে যদি পানিবণ্টন করা হয় তাহলে উত্তর বঙ্গের কয়েক লাভ মানুষ সেচের জন্য ব্যাপক পানি সংকটে ভুগবে। একই সঙ্গে পানের উৎস হিসেবেও তিস্তার পানির উপর উত্তরবঙ্গের মানুষ নির্ভরশীল। এ কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তার পানিবণ্টন সম্ভব নয়।’ তিনি লিখেছেন, ‘রাজ্য সরকারকে অন্তভুক্ত না করে তিস্তার পানি বণ্টন এবং ফারাক্কা চুক্তির বিষয়ে কোনো আলোচনা ফলপ্রসু হবে না।
পশ্চিমবঙ্গের মানুষের স্বার্থ কোনো ভাবেই বিঘ্নিত হতে দেওয়া হবে না।’ উল্লেখ্য, গত ২২ জুন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুই দিনের নয়াদিল্লি সফরে গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি নবায়নসহ ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ১০টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। ওই সময় নরেন্দ্র মোদি বলেন, বাংলাদেশের দিকে তিস্তার পানি সংরক্ষণ ও পরিচালন পদ্ধতি উন্নয়নের জন্য একটি বিশেষজ্ঞ দল শিগিগিরই বাংলাদেশ সফর করবে। ২০১১ সালে ভারত ও বাংলাদেশ তিস্তা চুক্তির খসড়া তৈরি করে। তবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের বিরোধীতার কারণে সেই চুক্তি এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। খসড়া অনুযায়ী, খরার সময় ভারতের ৩৭ দশমিক ৫ আর বাংলাদেশের ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ পানি পাওয়ার কথা হয়।
সংবাদটি শেয়ার করুন।
Copyright © 2024 সংবাদের আলো. All rights reserved.