সংবাদের আলো ডেস্ক: মানব শরীরের গুরুত্বপূর্ণ এক অঙ্গ হলো ফুসফুস। ফুসফুস মানব শরীরের এমন একটি অঙ্গ যা শ্বাস-প্রশ্বাসের কাজে ব্যবহৃত হয়। এই শ্বাসযন্ত্রটির প্রধান কাজ হলো বাতাস থেকে অক্সিজেনকে রক্তপ্রবাহে নেওয়া এবং অন্যদিকে রক্তপ্রবাহ হতে ক্ষতিকারক কার্বন ডাই-অক্সাইডকে বাতাসে নিষ্কাশন করা। আর এই গুরুত্বপূর্ণ কাজ ফুসফুস বিরামহীনভাবে করে চলে। শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বিশ্রাম পেলেও ফুসফুস কিন্তু তা পায় না। তবে জীবনযাত্রা কিংবা ভুল কিছু অভ্যাসের কারণে ফুসফুসে সমস্যা তৈরি হয়ে যায়। বর্তমানে ফুসফুসের বিভিন্ন ব্যাধিতে আক্রান্তের সংখ্যা বিশ্বজুড়েই বাড়ছে। এর অন্যতম কারণ হলো ধূমপান, পরোক্ষ ধূমপান ও বায়ু দূষণ। এসব ক্ষেত্রে ফুসফুসে জমতে থাকে ময়লা। ফলে শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি সিওপিডি বা অ্যাজমার সমস্যা বাড়ে। এছাড়া সর্দি-কাশি তো আছেই।
বিভিন্ন গবেষণা বলছে, নিয়মিত ফুসফুসে টক্সিন পৌঁছে গেলে ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব ঠেকাতে নিয়মিত কিছু স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া কমলা, পেয়ারা, আঙুর, লেবুর মতো ভিটামিন সি–সমৃদ্ধ ফল নিয়মিত খেতে হবে। এসব ফল ফুসফুস ভালো রাখে। চলুন ফুসফুস ভালো রাখতে পারে—এমন কয়েকটি খাবার সম্পর্কে জেনে নেই লাল-হলুদ রঙের সবজি এই পুষ্টিবিদের মতে, ফুসফুস ভালো রাখতে লাল রঙের সবজির বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে পাতে রাখতে পারেন বিটরুট, মিষ্টি আলু, টমেটো কিংবা গাজর। এ ধরনের সবজিতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও বিটা ক্যারোটিন। যা ফুসফুসের জন্য উপকারী। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কমিয়ে দেয় ফুসফুসের উপরের চাপ। হলুদও ভালো ফুসফুসের জন্য খুবই ভালো। এতে থাকা পুষ্টিগুণ শরীরের নানা ভিটামিন ও খনিজের অভাব পূরণ করে। দেখা গেছে, হলুদ নিয়মিত খেলে অনেক ক্ষেত্রেই বহু সমস্যা মিটে যায়।
এক্ষেত্রে হলুদের মধ্যে থাকা কারকিউমিন হল একটি বিশেষ ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা পুরো শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের যত্নের পাশাপাশি ফুসফুসও সুস্থ রাখে। শাক ডায়েটে নিয়মিত শাক রাখা জরুরি। বিভিন্ন ধরনের শাকে থাকেছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এছাড়া দেখা গেছে, শাকে থাকা ফ্ল্যাভানয়েডস ফুসফুসের কোষের সমস্যা আটকাতে পারে। খাবারে রসুন ও আদা ব্যবহার খাবারের স্বাদ বাড়াতে রসুন ও আদা ব্যবহার করা হয়। তবে জানলে অবাক হবেন, এই দুটি ভেষজ উপাদান শুধু মসলা হিসেবেই নয় বরং ফুসফুসসহ সামগ্রিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেয়। এসব উপাদানেও আছে ভরপুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা শরীর ভালো রাখতে সাহায্য করে। গ্রিন টি গ্রিন টি’র স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে সবারই কমবেশি ধারণা আছে।
অতিরিক্ত ওজন কমানো থেকে শুরু করে শরীরে জমে থাকা টক্সিন বের করে দিতে দারুন কার্যকরী এক প্রাকৃতিক উপাদান হলো গ্রিন টি। সবুজ চায়ে থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, যা ফুসফুস ভালো রাখে। এক্ষেত্রে মিউকাস বা কফ ফুসফুসে তৈরি হতে বাঁধা দেয় এই পানীয়। এছাড়া দেখা গেছে, সিওপিডি রোগীর ক্ষেত্রেও দারুন উপকারী এই সবুজ চা। আমলকি গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত আমলকি খেলে যকৃতের ধূলিকণার সব ক্ষতি ঠেকানো যায়। আমলকিতে থাকা ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, সর্দি-কাশি ঠেকাতে পারে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেও আমলকির জুসের গুণ বর্ণনা করে বলা হয়েছে, শরীরের সব ধরনের ক্রিয়ার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে তা।