বুধবার, ২৩শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

পঞ্চগড়ে বিদ্যালয়ে কর্মচারী নিয়োগে দূর্নীতি ও সম্পদ আত্মসাৎ’র অভিযোগ প্রধান শিক্ষক ও কমিটির বিরুদ্ধে

পঞ্চগড় প্রতিনিধি: পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় কালিয়াগঞ্জ নবারুন দ্বি মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম,দূনীর্তি ও বিদ্যালয়ের সম্পদ আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মোজাম্মেল হকসহ সদ্য বিলুপ্ত ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে।

এঘটনায় বিদ্যালয় চত্ত্বরে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবীতে বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও স্থানীয়রা মানববন্ধন কর্মসূচীও পালন করেছে। এর আগে তারা বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগও দায়ের করে।

অভিযোগে সৃত্রে জানা যায়,গত ২০২৩ সালে ওই বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী,নৈশ্য প্রহরী,অফিস সহায়ক ও আয়াসহ চারটি পদের নিয়োগে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক,সদ্য বিলুপ্ত ম্যানেজিং কমিটি ও নিয়োগ কমিটির সদস্যরা প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার ঘুষের বিনিময়ে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ প্রদান করে নিজেদের মধ্যে টাকা ভাগাভাগি করে নেন বলে অভিযোগ করেন অভিভাবক ও স্থানীয়রা। এছাড়া দীর্ঘ দিন ধরে বিদ্যালয়ের আবাদি জমি ও পুকুরসহ প্রায় ২১ বিঘা জমি থেকে বছরে যে অর্থ আয় হয় সেই অর্জিত অর্থ বিদ্যালয়ের ফান্ডে জমা না করে ও নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে সেই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন

এদিকে বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়,বিদ্যালয়ের জমির পরিমান ও কোন অবস্থায় রয়েছে সেই বিষয়ে কোন উত্তর দিতে পাররেনি বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক। এছাড়া ওই প্রতিষ্ঠানের জমির পরিমান ও কৃষি জমি কার দখলে বা বছরে কত টাকা পান সেই উত্তরও তিনি দেননি। তবে স্থানীয়রা বলছেন আবাদি জমি থেকে যে আয় হয় সেই অর্থ বর্তমানে বিদালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক ও তথ্য ও গ্রন্থাগারিক সহকারী শিক্ষক আবুল বাশার বাবুল আত্মসাৎ করে আসছেন । তবে বিদ্যালয়ের যারা দাতা সদস্য রয়েছে তারা তাদের জমি বিদ্যালয়ের নামে দান করলেও সেই জমি আবার তারাই ভোগদখল করে আসছেন বলে জানা গেছে।

এবিষয়ে স্থানীয় আব্দুল জলিল বলেন,বিদ্যালয়ে নিয়োগ দিয়ে ৫০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রধান শিক্ষক,ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি ও বাশার মাস্টার। বিদ্যালয়ের অনেক জমি রয়েছে সেই জমি থেকে যে আয় হয় সেই জমি তাদের পকেটে ভরে তারা। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবী জানাচ্ছি।

একই কথা বলেন, স্থানীয় রবিউল ইসলাম, তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক হলেও সব কাজ করেন বাশার মাস্টার। তিনি আ”লীগের ক্ষমতা দেখিয়ে বিদ্যালয়ে অনেক অনিয়ম করেছে । হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলে যান। তিনি ঠিকমতো ক্লাস নেন না৷

এবিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত ) মোজাম্মেল হক জানান, আমি এক বছর হয়েছে এই বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পদে দায়িত্ব পালণ করছি । আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা মিথ্যা ও বানোয়াট। তবে যারা নিয়োগ পেয়েছে তাদের কাছে আমি বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য অনুদান চেয়েছি কিন্ত তারা দেয়নি। বিদ্যালয়ের জমি আছে ,কিন্ত যারা আবাদ করছে তারা কোন টাকা দেয় না। আমি একটি পুকুরের ভাড়া বাবদ ৬ হাজার টাকা,ও দুুটি আবাদি জমি থেকে ১২ হাজার সহ ১৮ হাজার টাকা পেয়েছি । তার মধ্যে ৬ হাজার টাকা বিদ্যালয়ের ফান্ডে জমা করেছি এবং ১২ হাজার টাকা দিয়ে শৌচাগারসহ বিভিন্ন কাজ করেছি বিদ্যালয়ের। যারা জমি ধরে রেখেছে তাদের কাছে আমি টাকা চাই কিন্তু দেয় না ।

এবিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের তথ্য ও গ্রন্থাগারিক সহকারী শিক্ষক আবুল বাশার বাবুল বলেন,আমার নামে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা মিথ্যা। আমি কয়েক বছর ধরে চাকুরি করছি এই প্রতিষ্ঠানে কিন্তু আমি কোন বেতন-ভাতা পাই না । আমি বিনা পারিশ্রমে প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করে যাচ্ছি। আমি কোন অনিয়ম বা দূনীর্তির সাথে জড়িত নই । আমি শিক্ষক প্রতিনিধি ছিলাম কিন্ত আমার যে দায়িত্ব সেই দায়িত্ব শুধু পালন করেছি।

এদিকে সদ্য বিলুপ্ত ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোস্তফার রহমান বলেন, আমি দায়িত্ব থাকা অবস্থায় যে নিয়োগ হয়ে ছিল তা নিয়ম অনুযায়ী হয়েছে। যারা যোগ্য ও মেধাবী তারাই নিজ নিজ যোগ্যতায় চাকুরী পেয়েছে। আমরা কোন অর্থ লেনদেন করিনি।

এবিষয়ে বোদা উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়ের সভাপতি শাহরিয়ার নজির বলেন, আমার জানা মতে এবিষয়ে কোন অভিযোগ আসেনি৷ আসলে সুষ্ঠ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।

----- সংশ্লিষ্ট সংবাদ -----

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়