পঞ্চগড় প্রতিনিধি: জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করতে পঞ্চগড়ে তেঁতুলিয়ায় এক ছাত্রলীগ নেতার নামে ইভটিজিংয়ের মিথ্যা অপবাদ দিয়ে অপপ্রচার চালানো অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে ওই ছাত্রলীগ নেতা সহ তার পরিবারটি। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুপুরে জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের দেবনগর বম্রোতল এলাকায় নিজ বাড়িতে ওই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে তারা । সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী পরিবারের আব্দুস সাত্তার ও দেবনগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি নুর আলম সিদ্দিক। এ সময় ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে আব্দুস সাত্তার অভিযোগ করে বলেন, আমিরুল ইসলামের পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ৪৪৭৯ ও ৪৫০৯ এই দুই দাগের ৪১ শতক জমির মধ্যে গত ২০১৩ সালে সাড়ে ৫ শতক জমি কেনেন আব্দুস সাত্তার ও বর্তমান ইউপি সোলেমান আলী দুই ভাই। পরে জমি রেজিষ্ট্রি নিয়ে ভোগদল করতে থাকেন তারা। এর মধ্যে হঠাৎ গত ১ জুন জমি দখলে নিতে ট্রাক্টরে করে জমিতে মাটি ভরাট শুরু করে আমিরুল৷ পরে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা বাধা দিলে ও পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে বিষয়টি সমাধান করেন। তবে রাতের আধারে তারা ওই জমিতে ঈদ এনে ফেলেন। পরে ওই জমিকে কেন্দ্র করার ঘটনায় গত ১০ জুন সকালে ভুক্তভোগী পরিবারের সাথে বিরোধে জোড়ায় আমিরুলসহ তার স্বজনরা।
এ সময় দুই পক্ষের অন্তত ছয় জন আহত হন। জমি নিয়ে বিরোধের ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে প্রতিবেশী আমিরুল ও তার স্বজনেরা ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য নুর আলম সিদ্দিকের নামে ইভটিজিংয়ের অভিযোগ তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ বিভিন্ন অপপ্রচার চালাতে থাকেন। তবে ঘটনার সাথে সাথে আহতদের ছবি দিয়ে জমি নিয়ে বিরোধের ঘটনায় কথা ফেসবুকে লিখে পোস্ট করেন আমিরুলের স্বজনরা৷। তবে রাত যেতে না যেতে বিষয়টি ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টায় জড়ায় আমিরুল। এবিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা নুর আলম সিদ্দিক অভিযোগ করে বলেন,আমি নিজের প্রতিষ্ঠানে ছিলাম। তারাই আমাকে হামলা করতে আসে। এর মাঝে তারাই আবার বি বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে আমার নামে মিথ্যা প্রচারণা করছে। আমি এক তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানা।
তিনি আরো বলেন, আমার প্রতিপক্ষ আমাদের সরলতা সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করছে। আমার বাবা একজন ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান। তিনি যেহেতু আইনের মানুষ তাই আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল৷ প্রতিপক্ষ আমাদের সাথে লাগতে আসলেও আমরা আইনের আশ্রয় নিয়ে থাকি। কিন্তু আমাদের প্রতিপক্ষ এই শ্রদ্ধাকে পুঁজি করে বিষয়টিবি অন্য খাতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। যেদিন ঘটনা সেদিন তাদের পরিবারের এক ছেলে ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে যে জমিজমা নিয়ে নাকি আমরা হামলা করেছি। কিন্তু ভিডিওতে তার উল্টোটা দেখা যাচ্ছে। এখন কি করবে তাই ভিন্ন পদ্ধতি বের করেছে। জমি নিয়ে ঝগড়া বিবাদ থাকতে পারে, তার জন্য রয়েছে প্রশাসন ও আদালত। তাই বলে এভাবে সমাজে একজন মানুষকে নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার করার কোন আইন নাই।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী আব্দুস সাত্তার বলেন,আমার ভাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাতিজা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। আমার সাথে জমি বিক্রি করেও আমিরুল ও তার স্বজনরা সেই জমি দখল করার চেষ্টা করছে । আমার ভাই ও ভাতিজা জনপ্রতিনিধি। তাদের ক্ষতির জন্য এমন করতেছে তারা৷ জমি নিয়ে বিরোধ চলছে তার সমাধানের জন্য প্রশাসন,থানা ও আদালত রয়েছে। তবে এভাবে একটি বিষয়কে ভিন্ন খাতে নিয়ে যাওয়া ঠিক হয়নি। আমি তাদের বিচার চাই৷ তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে আমিরুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায় নি। এ বিষয়ে আমিরুলের ছেলে নাইম বলেন, জমি জমা নিয়ে তাদের সাথে বিরোধ ঠিক। কিন্তু নুর আলম আমাদের মেয়ের গায়ে হাত দিয়েছে। ক্ষিপ্ত হয়ে অপমান করেছে বলেও পাল্টা অভিযোগ করেন।
সংবাদটি শেয়ার করুন।
Copyright © 2024 সংবাদের আলো. All rights reserved.