সংবাদের আলো ডেস্ক: রাজধানীর নয়াপল্টন ও খিলগাঁও এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির ৩০ হাজার সিম কার্ডসহ বিপুল পরিমাণ বিটিআরসির অনুমোদনবিহীন অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জামাদি উদ্ধার করেছে র্যাব-৩। রবিবার (৯ জুন') রাতে খিলগাঁও ও সোমবার (১০ জুন) সকালে পল্টনের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে র্যাব। এসময়, অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জামাদি স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে বর্হিবিশ্বে টেলিযোগাযোগের ব্যবসা করার অভিযোগে মো. সাইফুল ইসলাম ও আব্দুর রহিম রাজ নামে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযান শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. ফিরোজ কবীর।র্যাব জানায়, পল্টনের অভিযানে ৫১২ পোর্ট এর ৩টি সীমবক্স, ২৫৬ পোর্ট এর ৫টি সীমবক্স, ১২৮ পোর্ট এর ৫টি সীমবক্স, ১৬ পোর্ট এর ৩টি সীমবক্স, ৫টি ওয়ারলেস রাউটার, ৬টি স্যুইচ, ২৫টি জিএসএম এন্টিনার, ৩টি মিনি পিসি, ৩ টি মিডিয়া কনভাটার, ১টি এসএসডি হার্ড ডিস্ক, ১টি ল্যাপটপ, ১টি সিপিও, ২টি পাওয়ার ক্যাবল, ২টি ইউএসবি ক্যাবল, ২টি চার্জার, ২টি মোবাইল ফোন, প্রায় ৩০ হাজার বিভিন্ন কোম্পানীর সীমকার্ড,১টি মাইক্রোটিক রাউটার এবং ৫টি পেনড্রাইভ এবং চার রাউন্ড পিস্তলের গুলি উদ্ধার করা হয়। আসামির জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র্যাব জানায়, খিলগাঁও থেকে গ্রেফতার রহিম তিন বছর ধরে অবৈধভাবে ভিওআইপি সরঞ্জামাদি দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করে বর্হিবিশ্বের সঙ্গে টেলিযোগাযোগ ব্যবসা করছে।
এতে করে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে।' র্যাবের এই অধিনায়ক বলেন, রাজধানীর গুলিস্তানের পাতাল মার্কেটে সাইফুলের একটি মোবাইল মার্কেট ছিলো। তার দোকানের কর্মচারী ওয়ালির মাধ্যমে সে এই ব্যবসায় জড়ায়। দোকানেই তারা চার পাঁচ মাস ধরে ব্যবসা পরিচালনা করে। পরবর্তীতে যে টাকা আয় হয় সেই টাকা দিয়ে তারা আরও যন্ত্রপাতি কিনে এই বাসায় ব্যবসা পরিচালনা করে। এছাড়া ওয়ালি দুবাইতে গিয়ে আর্ন্তজাতিক একটি চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে যায়। সেখানে বসেই তিনি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন।
আর দোকান মালিক সাইফুল ওয়ালির কর্মচারী বা সহযোগী হিসেবে দেশে বসে এই ব্যবসা পরিচালনা করেন। এছাড়া জার্মান প্রবাসী জামানের সহযোগিতায় ব্যবসায়টি চালাত সাইফুল। জামানের মাধ্যমে একটি বিশেষ সফটওয়্যার সংগ্রহ করে। সাধারণত বৈধভাবে আন্তর্জাতিক গেট ওয়ের কলগুলো গ্রাহকের কাছে আসলে মোবাইল অপরেটরের মাধ্যমে সরকার সঠিক রাজস্ব পেতো। কিন্তু এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করায় আন্তর্জাতিক কলগুলো সাধারণ কলে পরিণত হয়। ফলে দেশের অভ্যন্তরে লোকাল কল পরিণত হতো।
ফলে আন্তর্জাতিক কল আসলেও সরকার বিশাল পরিমাণ রাজস্ব হারাত। র্যাব জানায়, সাইফুল এই সকল সিমগুলো বিভিন্ন সময়ে হাত বদল হয়। সিম সচল রাখার জন্য ম্যাসেজ পাঠানো হতো। বিটিআরসির তৎপরতার কারণে সিম বন্ধ করে দেওয়া হতো। ফলে নানা কৌশলে তারা সিমগুলো সচল রাখত। এছাড়া সিমগুলো বেশি টাকায় সিম সংগ্রহ করত। অজ্ঞাতসরে সিম কিনতে যাওয়া ব্যক্তিদের ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে একাধিক সিম রেজস্ট্রেশন করে নিতো। এই সকল সিম বেশি দামে কিনেই ব্যবহার করতেন সাইফুল।
সংবাদটি শেয়ার করুন।
Copyright © 2024 সংবাদের আলো. All rights reserved.