শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

নেত্রকোণায় মধ্যরাতে মন্দিরে নাশকতা করতে গিয়ে হিন্দু যুবক আটক

সংবাদের আলো ডেস্ক: নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলায় হিন্দুদের মন্দিরে নাশকতা করতে গিয়ে নেপাল চন্দ্র ঘোষ (৩২) নামে সনাতন ধর্মের এক যুবক স্থানীয় হিন্দু-মুসলিম জনতার হাতে ধরা পড়েছেন। উপজেলার জারিয়া ইউনিয়নের বাড়হা কালীবাড়ী রাধা গোবিন্দ মন্দিরে শনিবার রাতে নাশকতা করতে গেলে ধরা পড়েন তিনি। আটক নেপাল চন্দ্র ঘোষ মন্দিরের পাশের বাড়হা ঘোষপাড়ার সুধীর চন্দ্র ঘোষের ছেলে।

রোববার (১৮ আগস্ট) সকালে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। মন্দিরের পাশে বসবাসকারী স্থানীয় বাসিন্দা কেবল চন্দ্র বর্মন বলেন, শনিবার রাত ২টার দিকে তিনি টয়লেটে যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বাইরে বের হয়ে মন্দিরে আঘাতের শব্দ শুনতে পাই। পরে পার্শ্ববর্তী আরও কয়েকজনকে ডেকে নিয়ে মন্দিরের কাছে যাই।

এসময় আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে কয়েকজন দুটি মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যান। পরে আমরা ধাওয়া দিলে মন্দিরের ভেতর থেকে সীমানা প্রাচীর টপকে পালানোর সময় নিচে পড়ে যান নেপাল চন্দ্র ঘোষ নামে এক যুবক। এরপর তাকে আটক করা হয়।

আটক নেপাল চন্দ্র ঘোষ জানান, দানবাক্স ভেঙে টাকা লুট করে মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন তারা। নেপাল ছাড়াও প্রতিবেশী কৃষ্ণ ঘোষের ছেলে জয় চন্দ্র ঘোষ এবং পাশের দুর্গাপুর উপজেলা থেকে আসা আরও ছয়জন এ পরিকল্পনা করেছিলেন। এজন্য তাদের ৩০ হাজার টাকা করে দিতে চেয়েছিলেন জয় চন্দ্র ঘোষ। পরিকল্পনা অনুযায়ী রাতে সবাই মিলে তারা হাতুড়ি-ছেনা দিয়ে দানবাক্স ভাঙার জন্য আঘাত করছিলেন। আর আগুন দেওয়ার জন্য কিছু খড় ও গ্যাসলাইটার প্রস্তুত রাখেন। কিন্তু হাতুড়ির আঘাতের শব্দে স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে ছুটে এলে তাদের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়।

খবর পেয়ে রাতেই উপজেলা বিএনপি ও জামায়াতের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আটক নেপাল চন্দ্র ঘোষকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. সাইদুর রহমান তালুকদার বলেন, খবর পেয়ে ভোরেই ঘটনাস্থলে ছুটে যাই এবং হিন্দু নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলি। একটি চক্র দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এমন অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

স্থানীয় পূজারি সুনীল চন্দ্র বর্মন বলেন, আমার এখানে দীর্ঘদিন ধরে হিন্দু-মুসলিম সবাই মিলে সম্প্রীতি বজায় রেখে বিভিন্ন পূজা উৎসব করে আসছি। রাতের ঘটনাটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। এর মাধ্যমে একটি চক্র আমাদের সম্প্রীতির বন্ধনকে বিনষ্ট করতে চায়। মন্দির কমিটির সভাপতি শ্যামল চন্দ্র বর্মন জানান, রাতে আমি পূর্বধলা বাজারে ছিলাম। খবর পেয়ে রাতেই ছুটে আসি এবং পুলিশে খবর দেই।

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, স্থানীয় লোকজন টের না পেলে এখানে হয়তো তারা বড় ধরনের নাশকতা করত। এ ঘটনায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তাজুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আটক নেপাল চন্দ্র ঘোষকে থানায় নিয়ে এসেছে। এ ব্যাপারে পুলিশি তদন্ত চলছে। সূত্র: বাংলানিউজ২৪

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।

----- সংশ্লিষ্ট সংবাদ -----

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়