টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: আওয়ামীলীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শান্তিপূর্ণভাবে মানুষ তার ভোটের অধিকার প্রয়োগ করবেন। তাদের ইচ্ছামতো ভোট দেবেন। এখানে কেউ কাউকে বাধা দিতে পারবেন না। কোনো প্রকার সংঘাত আমি চাই না। এ সময় তিনি ভোটারদের শান্তিপূর্ণভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার পরিবেশ তৈরি করতে প্রার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আপনাদের পছন্দের প্রার্থীকে আপনারা ভোট দেবেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বুধবার (৩ জানুয়ারি) গাইবান্ধা, রাজশাহী, টাঙ্গাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, চট্টগ্রামের স›দ্বীপের জনসভায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন আওয়ামীলীগ সভাপতি।
এ সময় টাঙ্গাইল অংশ থেকে যুক্ত হন- জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম (ভিপি জোয়াহের) এমপি। সভাপতিত্ব করেন, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুক। এছাড়া আওয়ামীলীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ডক্টর মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি, টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের প্রার্থী তানভীর হাসান ছোট মনির এমপি, টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে নৌকার প্রার্থী ডা. কামরুল হাসান খান, টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের প্রার্থী মোজহারুল ইসলাম তালুকদার, টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের প্রার্থী অ্যাডভোকেট মামুন অর রশিদ, টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনের প্রার্থী আহসানুল ইসলাম টিটু এমপি, টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে নৌকার প্রার্থী খান আহমেদ শুভ এমপি এবং টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে নৌকার প্রার্থী অনুপম শাজাহান জয় ও বিভিন্ন এলাকার দলীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক সহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা জনসভায় অংশ নেন। এর আগে টাঙ্গাইল শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে আয়োজিত জনসভায় প্রতিটি আসনের প্রার্থীদের পক্ষে মিছিল-ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে নেতাকর্মী-সমর্থকরা এসে সমবেত হন।
প্রার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামীলীগ সভাপতি বলেন, আমি কোনো প্রকার গন্ডগোল চাই না। সহনশীলতা আপনাদের দেখাতে হবে। নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ ভোট দিতে পরিবেশটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখতে হবে- এই নির্বাচনটা দেশের জন্য একান্তভাবে জরুরি। কারণ, এই বাংলাদেশ নিয়ে অনেক রকম খেলা অনেকে খেলতে চায়।
শেখ হাসিনা বলেন, যারা স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করে না- জয় বাংলা স্লোগান যারা নিষিদ্ধ করে; ৭ মার্চের ভাষণ যারা নিষিদ্ধ করে দেয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যারা ধ্বংস করে, তারা দেশটাকে ধ্বংস করবে। এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে। এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে যাতে কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে মানুষ তার ভোটের অধিকার প্রয়োগ করবেন। তাদের ইচ্ছামতো ভোট দেবেন। এখানে কেউ কাউকে বাধা দিতে পারবেন না। কোনো প্রকার সংঘাত আমি চাই না। আমি চাই- যে সত্যিকারভাবে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে, যে নির্বাচনে জনগণ তার পছন্দমতো প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।
আওয়ামীলীগ সভাপতি বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসে দুর্নীতি, লুটপাট, জঙ্গিবাদ, বোমা, গ্রেনেড হামলা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন করে। দুর্নীতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে- সরকার তখন একটা না; প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পাশাপাশি আবার খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান হাওয়া ভবন খুলে দুর্নীতির আখড়া গড়ে তুলে। এতে দেশে চরম অরাজকতা সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, যখন দেখেছে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে তখন এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার লিস্ট তৈরি করে। আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন গঠন করে। এভাবে নির্বাচন করতে গিয়ে তারা ব্যর্থ হয়। ’৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জনগণের ভোট চুরি করে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল, কিন্তু জনগণ মেনে নেয়নি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আমাদের লক্ষ্য ছিল, আমরা বাংলাদেশকে উন্নত করবো। বাংলাদেশের মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেব। আমরা সেই বিষয়ে যথেষ্ট অগ্রগতি লাভ করেছি।
এ সময় তিনি যোগাযোগ, প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার সরকারের নেওয়া উন্নয়ন পরিক্রমা ও মানুষের কল্যাণে নেওয়া পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন। শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াতের চরিত্র হলো দুর্নীতি করা আর মানুষ খুন করা। ২০১৩-১৪ সালের মতো এবারও তাদের ভয়াল রূপ নিয়ে মানুষের সামনে হাজির। মায়ের কোলে শিশুকে পুড়িয়ে মারার ঘটনা পুরো বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে।
সাংবাদিকদের পিটিয়েছে, পুলিশকে কীভাবে পুড়িয়ে মেরেছে! প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করেছে। বাংলাদেশের মানুষকে এই দুর্বৃত্ত পরায়নতার বিরুদ্ধে জবাব দিতে হবে। আপনারা নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করে এর জবাব দেবেন এবং উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত রাখবেন।
সংবাদটি শেয়ার করুন।
Copyright © 2024 সংবাদের আলো. All rights reserved.