নবীনগরে সরকারি জমিতে নির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে সোমবার(১৫ জুলাই) বাঙ্গরা বাজারে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের যৌথ অভিযানে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ উচ্ছেদ অভিযানে সর্বস্ব হারিয়ে বাজারের শত শত ব্যবসায়ী এখন সর্বস্বান্ত। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কোন ধরণের নোটিশ ছাড়াই আচমকা এ ভয়াবহ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করায় বাজারের প্রায় আড়াইশ দোকানী দোকান থেকে তাদের কোন মালামালাই সরাতে পারেন নি। এতে প্রায় ৩০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে সর্বস্বান্ত হওয়া ব্যবসায়ীদের দাবী। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ তথা সওজের দাবী, বারবার নোটিশ দেওয়ার পরও সড়কের দুইপাশে থাকা সরকারি জায়গা থেকে দোকানগুলো না সরানোর কারণে যথাযথ নিয়ম মেনেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কঠোর নির্দেশে আজ আড়াইশো অবৈধ দোকানপাঠ উচ্ছেদ করা হয়। নবীনগর কোম্পানীগঞ্জ সড়কে অবস্থিত বাঙ্গরা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সওজের জেলা কর্মকর্তাবৃন্দ, উপজেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ও প্রচুর সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতিতে একাধিক বড় বড় ক্রেন দিয়ে সড়কের দুই পাশে থাকা প্রায় আড়াইশ পাকা অর্ধপাকা দোকানপাঠ উচ্ছেদ করা হচ্ছে। এসময় সর্বত্র চরম আতংক ছড়িয়ে পড়া দোকান মালিক ও তাদের আত্মীয় স্বজনদের আহাজারিতে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। সকাল ৯-টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর ২টা নাগাদ সড়কের দুই পাশে থাকা সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে উঠা আড়াইশ দোকান পুরোপুরি গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বাঙ্গরা বাজারের সভাপতি, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল আলম রবি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “কোন নোটিশ ছাড়াই আচমকা উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে কোন দোকানী কারও দোকান থেকে এক টাকার মালামালাও সরাইতে পারেনাই। এই আচমকা অভিযানে ৩০ কোটি টাকার ক্ষতি হইছে। ব্যবসায়ীরা এখন সর্বস্বান্ত।” উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তানভীর ফরহাদ শামীম জানান, দোকানগুলো সরকারি জমিতে অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল। দোকান সরিয়ে নিতে ব্যবসায়ীদের একাধিকবার নোটিশ দেয়া হয়েছে। সরকারি জমিতে অবৈধভাবে নির্মাণ করা কোন স্থাপনা টিকিয়ে রাখা হবে না। তিনি ভবিষ্যতে এ ধরণের ঘটনা পুনরাবৃত্তি না হওয়ার জন্য স্থানীয়দের সচেতন থাকার আহ্বান জানান।এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ এমন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘একবার দুবার নয়, অসংখ্যবার বড় এই বাজারে রাস্তার দুই পাশের সরকারি জায়গা থেকে আড়াইশ দোকানদারকে নোটিশ দেয়া হয়েছে, একাধিকবার মাইকিং করা হয়েছে। কিন্তু তারা কর্ণপাত করেনি। ফলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কঠোর নির্দেশে যথাযথ নিয়ম মেনেই আজ উচ্ছেদ অভিযান করা হয়।’ এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদল সাংবাদিকদের বলেন, আমাকে আগে জানানো হয়নি আজ সকালেই জানানো হয়েছে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের বিপক্ষে আমি নই তবে শুধু বাঙ্গরা বাজারকে কেন বারবার টার্গেট করা হচ্ছে, নবীনগর টু কোম্পানীগঞ্জ ২৯ কিলোমিটার সড়কে দুই পাশে গড়ে উঠা অবৈধ সকল স্থাপনা উচ্ছেদ করা হউক। বারবার এ বাজারকে টার্গেট করার পিছনে একটি স্বার্থান্বেষী মহল কাজ করছে। আইন সবার ক্ষেত্রে সমান হওয়া উচিত ।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।