দ্বিতীয় স্বাধীনতা এসেছে হাজারো ভাইয়ের রক্তের বিনিময়ে-সমন্বয়ক মাহিন সরকার
উজ্জ্বল অধিকারী: বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. মাহিন সরকার বলেছেন, দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলা হয় সেই স্বাধীনতা এসেছে হাজারো ভাইয়ের রক্তের বিনিময়ে, যারা এক সেকেন্ড আগেও জানতো না মাথার এই পাশ দিয়ে বুলেট এসে মাথার খুলি ভেদ করে চলে যাবে। আমরা জানতাম আমরা মারা যাচ্ছি।
মাহিন সরকার আরও বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের যে ডিবিতে নেওয়া হতে পারে এটা নাহিদসহ তারা আগেই বুঝতে পেরেছিলেন। তারা আগেই আমাদের জানিয়ে দিয়েছিল, আমরা কিন্তু ডিবিতে যেতে পারি। আমরা নাও থাকতে পারি, তোমরা আন্দোলন চালিয়ে নিও।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিরাজগঞ্জ সরকারি ইসলামিয়া কলেজ মাঠে গণ অভ্যুথানের প্রেরণায় শহীদ পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ, ঐক্য প্রতিষ্ঠা, এবং দুর্নীতি, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছাত্র-নাগরিক সাধারণ সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহিন বলেন, সিরাজগঞ্জসহ সারাদেশে এখনো কিন্তু চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি, সারাদেশের সিন্ডিকেট এখনো ভাঙ্গেনাই। প্রত্যেকটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড একপক্ষ থেকে আরেক পক্ষে হ্যান্ড ওভার হয়েছে। তাদের সঙ্গে কি আমরা আপোষ করব প্রশ্ন রেখে স্লোগান দেন আপোষ না সংগ্রাম, দালালি না রাজপথ।
আমরা কারো বা কোন পক্ষের দালালি করতে আসিনাই। আমাদের বন্দুকের ভয় অনেক আগেই দেখাইছেন, আমরা সেই ভয় পাইনি। টাকা দিয়ে কেনার চেষ্টা করেছেন, অনেক প্রলোভন দেখিয়েছেন, বাবা আসো মিডিয়া হাইলাইটস দেব, নেতা হবা তুমি, লাইফে যা যা লাগে সব দিব। আমি ওদেরকে প্রশ্ন করেছি, যদি আমাদের এই আন্দোলন নষ্ট করতে পারেন তাহলে আপনার র্যাংক উন্নীত হবে। আর আমি যদি আন্দোলন সফল করতে পারি তাহলে আমার নাম ইতিহাসের পাতায় থাকবে। শুধু আমার কথা নয়, এই প্রজন্মের কথা আমি বললাম। আমাদেরকে টাকা দিয়ে কেনা যায় নাই, আমাদের সাথে আপোষ করে পারেনাই ফ্যাসিস্টরা। আমরা এখনো ভয় পাইনা, প্রয়োজন হলে আবারও রাজপথে নামতে রাজি।
মাহিন সরকার বলেন, আমার একটা কথা মনে থাকবে আজীবন, যখন নাহিদ ইসলাম ভাইসহ ৬জন সমন্বয়ককে যখন অস্ত্রের মুখে তাদের দিয়ে বিবৃতি দেওয়ানা হলো তখন আমরা বুঝতে পারছিলাম আমাদের এমন একটা সিদ্ধান্তÍ নিতে হবে যে সিদ্ধান্ত নিলেও মৃত্যু, না নিলেও মৃত্যু। যদি না নিতাম তাহলে সারাদেশের মানুষ বলতো এরা জাতীয় গাদ্দার। তখন ইতোমধ্যেই জনগণের মধ্যে থেকে কথা আসছিল এক দফা এক দফা। কমেন্টে গালাগালিও করছিল অনেকে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সিরাজগঞ্জের ছাত্র প্রতিনিধি ফয়সালের সঞ্চালনায় এ সময় আরও উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন কুবরাতুল আইন কানিজ, সাইফুল ইসলাম, মো. ইফতেখার আলিম আসাদ, আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (মেহেদী), ফায়সাল আহমেদ, আল রাকিব, ফাতিন মাহদি, সাদিকুল ইসলাম স্বাধীন, ঐশিক মন্ডল জয়, ইমাম হোসাইন ইমন। তারা সবাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন দায়িত্বে রয়েছেন। এসময় তাদের সার্বিক সহযোগিতা করেন সিরাজগঞ্জের ছাত্র প্রতিনিধিরা।
এর আগে, বেলা ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জ পৌর ভাসানী মিলনায়তনে আন্দোলনে শহীদদের পরিবার, আহত ও আহতদের পরিবার ছাড়াও আন্দোলনে অংশ নেয়া ছাত্র-জনতা ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে মতবিনিময় করেন তারা। এসময় জেলার বিভিন্ন উপজেলার ছাত্র-জনতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।