সংবাদের আলো ডেস্ক: বিশ্ব টেস্ট ক্রিকেটে বড় পরিবর্তনের আভাস মিলছে! সম্প্রতি এক অস্ট্রেলীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, দুই স্তরের টেস্ট ক্রিকেটের ধারণাকে সামনে এনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আইসিসির নতুন চেয়ারম্যান জয় শাহ। এতে ভারতের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডও সমর্থন দিচ্ছে বলে জানা গেছে।
বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির রেকর্ড উপস্থিতির পর নতুন ভাবনা
এই পরিকল্পনা সামনে আসার অন্যতম কারণ সম্প্রতি শেষ হওয়া বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির রেকর্ড দর্শক সংখ্যা। ভারত-অস্ট্রেলিয়ার পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে মাঠে ৮ লাখ ৩৭ হাজার ৮৭৯ দর্শক উপস্থিত ছিলেন। যা অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত কোনো অ্যাশেজ ব্যতীত সবচেয়ে বেশি দর্শকপ্রাপ্ত টেস্ট সিরিজ। এই সিরিজ ছিল অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসের চতুর্থ সর্বোচ্চ দর্শকসংখ্যার টেস্ট সিরিজ। এর আগে ১৯৩৬-৩৭, ২০১৭-১৮ ও ১৯৪৬-৪৭ সালের অ্যাশেজ সিরিজগুলোই কেবল দর্শক উপস্থিতিতে এগিয়ে রয়েছে।দুই স্তরের টেস্ট ফরম্যাট কীভাবে কাজ করবে?
নতুন প্রস্তাবিত দুই স্তরের টেস্ট ফরম্যাটে ক্রিকেট বিশ্বের শীর্ষ দলগুলো একে অপরের বিপক্ষে আরও বেশি সিরিজ খেলবে। এতে থাকবে দুটি বিভাগ:
✅ প্রথম স্তর (১ম ডিভিশন): ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান।
✅ দ্বিতীয় স্তর (২য় ডিভিশন): বাংলাদেশ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আয়ারল্যান্ড, আফগানিস্তান ও জিম্বাবুয়ে।
এতে নিচের স্তরের দলগুলো শুধুমাত্র নিজেদের মধ্যেই টেস্ট সিরিজ খেলবে, ফলে তারা শীর্ষ দলগুলোর বিপক্ষে কম সুযোগ পাবে। তবে এখনও নিশ্চিত নয় যে এতে উন্নীত হওয়ার (প্রোমোশন) বা অবনমনের (রিলিগেশন) কোনো নিয়ম থাকবে কিনা।
২০১৬ সালে বাতিল হয়েছিল, এবার কি বাস্তবায়ন হবে?
২০১৬ সালে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের তৎকালীন সভাপতি অনুরাগ ঠাকুর এই দুই স্তরের টেস্ট ফরম্যাটের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। তার যুক্তি ছিল, এটি ছোট দলগুলোর জন্য অন্যায্য এবং তাদের ক্রিকেট উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। ‘বিসিসিআই দুই স্তরের টেস্ট ব্যবস্থার বিপক্ষে, কারণ এতে ছোট দলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিসিসিআই চায় সবার স্বার্থ রক্ষা করতে,’ বলেছিলেন ঠাকুর। তবে এবার পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। ব্রডকাস্টারদের বড় একটি অংশ এই নতুন ফরম্যাটকে সমর্থন করছে, কারণ এতে টেস্ট ক্রিকেট আরও আকর্ষণীয় হবে এবং বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক হতে পারে।বিশেষজ্ঞদের মতামত: টেস্ট ক্রিকেট বাঁচাতে কি প্রয়োজন?
বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম জনপ্রিয় ভাষ্যকার রবি শাস্ত্রী এই ধারণার পক্ষে মত দিয়েছেন। বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির সময় তিনি বলেন, শীর্ষ দলগুলো নিজেদের মধ্যে বেশি খেললেই টেস্ট ক্রিকেট টিকে থাকবে। ‘আমি সবসময় বিশ্বাস করি, টেস্ট ক্রিকেটকে বাঁচাতে চাইলে বড় দলগুলোর একে অপরের বিপক্ষে বেশি খেলা দরকার। কারণ ক্রিকেটপ্রেমীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচ চায়,’ বলেন শাস্ত্রী। এই দুই স্তরের টেস্ট ফরম্যাট বাস্তবায়িত হলে ক্রিকেট বিশ্বে বড় পরিবর্তন আসবে, বিশেষ করে বাংলাদেশ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আফগানিস্তানের মতো দলগুলোর জন্য। এখন দেখার বিষয়, এই নতুন ফরম্যাট বাস্তবে রূপ নেবে, নাকি ২০১৬ সালের মতো আবারও বাতিল হবে?
সংবাদটি শেয়ার করুন।
Copyright © 2025 সংবাদের আলো. All rights reserved.