সংবাদের আলো ডেস্ক:কক্সবাজারের টেকনাফে চলন্ত অবস্থায় যাত্রীবাহী একটি সিএনজি গাড়ি গতিরোধ করে তিন জনকে অপহরণ করার ঘটনা ঘটেছে। তথ্য নিয়ে জানা যায়,সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ১০ টার দিকে ঘটনাটি সংঘটিত হয়। এরপর একই দিন বিকেলের দিকে ঘটে যাওয়া ঘটনার গোপন একটি ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। এতে করে উক্ত এলাকায় স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক উৎকণ্ঠা স্থানীয়দের মাধ্যমে আরও জানা যায়, টেকনাফ টু শামলাপুর গামী যাত্রীবাহী একটি সিএনজি সদর ইউপির অন্তর্গত মাঠপাড়া সংলগ্ন সড়কে গতিরোধ করে অপহরণকারী চক্রের কয়েকজন সদস্য। এরপর সিএনজিতে থাকা তিন জন যাত্রীকে গহীন পাহাড়ের দিকে নিয়ে গেছে বলে জানায় স্থানীয়রা। তবে অপহৃত হওয়া ব্যক্তিদের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। এবিষয়ে সিএনজি চালক নুরুল আমিন গণমাধ্যম কর্মীদের জানিয়েছেন, তার গাড়ী থেকে অপহৃত হওয়া যাত্রীরা মাছ ব্যবসায়ী। তারা মাছ ক্রয়ের উদ্দেশ্যে টেকনাফ থেকে শামলাপুর যাওয়ার পথে কয়েকজন অপহরণকারী গাড়ি থামিয়ে সিএনজি থেকে নামিয়ে পাহাড়ের দিকে নিয়ে গেছে। এদিকে গোপনে ধারণ করা ভাইরাল ভিডিও চিত্রটি দেখে স্থানীয়রা অপহরণকারীদের মধ্যে কয়েক জনকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছেন। উক্ত অপরাধীরা হচ্ছে- টেকনাফ সদর ইউনিয়ন মাঠ পাড়া এলাকার বাসিন্দা কবির আহমদের দুই পুত্র মজিব উল্লাহ ও শওকত উল্লাহ, লম্বরী এলাকার বাসিন্দা কবিরের পুত্র শহীদ, ৪নং ওয়ার্ড নতুন পল্লান পাড়া এলাকার নুরুল ইসলামের পুত্র মো.হাশিম, হাতিয়ারঘোনা এলাকার নজির আহমেদের পুত্র নয়ন। এ বিষয়ে স্থানীয়রা সময়ের কন্ঠস্বরকে বলেন,অপহরণ চক্রের এই সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের বিভিন্ন কৌশলে এনে পাহাড়ে নিয়ে গিয়ে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার পর ছেড়ে দেয়। টাকা না দিলে তাদের উপর চলে অমানবিক নির্যাতন। ঘটে যাওয়া ঘটনার চিত্র গুলো প্রায় সময় তাদের চোখে ধরা পড়ে। উক্ত এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা বুকে ভয়,আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠা নিয়ে বসবাস করছেন বলেও জানান তারা। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিহাদ জানান, আমাদেরকে প্রশাসন সহযোগিতা করলে আমরা অবশ্যই সামাজিকভাবে উক্ত অপরাধে জড়িত সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবো। আমরা নিরস্ত্র সাধারণ মানুষ নিয়ে পাহাড়ে তো অভিযান করতে পারব না। প্রায় সময় অপহৃত হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসতে হচ্ছে। নানান কারণে দেশ এখন অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে রয়েছে। এতে করে টেকনাফে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে বলেও জানান তিনি। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সকালে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো.গিয়াস উদ্দিন সময়ের কন্ঠস্বরকে বলেন, গতকাল ঘটে যাওয়া বিষয়টি স্থানীয় লোকজন থানায় এসে অবগত করলে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী উল্লেখিত ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি দল অভিযান পরিচালনা করে যা এখনও চলমান রয়েছে। তবে এ ঘটনার বিষয় নিয়ে এখনো পর্যন্ত ভিকটিমের পরিবারের কোনো সদস্য থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা। উল্লেখ্য, টেকনাফে উপজেলার অন্তর্গত বেশ কয়েকটি এলাকায় মাদক,মানব পাচারের পাশাপাশি অপহরণ বাণিজ্যের সংঘটিত ঘটনা গুলো বেড়েই চলছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবী উক্ত অপরাধে জড়িত থাকা অপরাধীদের চিহ্নিত করে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে এই অপরাধ কার্যক্রম দিন দিন বৃদ্ধি পাবে বলেও জানান তারা।
সংবাদটি শেয়ার করুন।
Copyright © 2024 সংবাদের আলো. All rights reserved.