ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: গত ২৭ ডিসেম্বর রাতে মারপিঠের একটি সংবাদের তথ্য সংগ্রহ করতে হাসপাতালে যায় সাংবাদিকরা। এসময় ইমার্জেন্সি রুমে উপস্থিত সাংবাদিকসহ অন্যান্য ব্যক্তিদের উচ্চস্বরে রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলেন জরুরি বিভাগের ডাক্তার নাঈম সিদ্দিকী।
সাংবাদিকরা পরিচয় দিলেও তিনি ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। এই ঘটনার ভিডিও সাংবাদিকরা ফেসবুকে পোস্ট করলে এর আগে ডাক্তার নাঈম সিদ্দিকীর খারাপ আচরণের শিকার ভুক্তভোগী ও সাংবাদিকরা নিন্দা জানিয়ে মন্তব্য করেন। এই ঘটনায় নিজের ঔদ্বত্যপূর্ণ আচরণের জন্য সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা না চেয়ে ডাক্তার নাঈম সিদ্দিকী ঝিনাইদহ জেলা পুলিশের সাইবার সেলে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, সাংবাদিকরা সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টি এবং তার মানহানি করেছেন। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাব। তারা ডাক্তারদের আচরণ সৌজন্যমূলক করে হাসপাতালে চিকিৎসার পরিবেশ ফেরাতে সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেদিনের ঘটনায় দৈনিক বীর জনতা’র বার্তা সম্পাদক ওমর আলী সোহাগ তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পাতায় “ ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের ডাক্তার নাঈমের আচরণ দেখুন” শিরোনামে ভিডিওটি পোস্ট করলে তাতে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ মন্তব্য করেন।
জেলার সাংবাদিকরাও এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে মন্তব্য করেন। জেলার মানুষ মন্তব্য করেন কোন ডাক্তারের আচরণ এমন হতে পারে না। এদিকে, জানাগেছে ডাক্তার নাঈম সিদ্দিকী প্রায়শই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও রোগীর স্বজনদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। আরও জানাগেছে, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল বিভিন্ন দুর্নীতিতে জর্জরিত। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক নিজে এই দুর্নীতির সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন। অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালে অপারেশন করাতে ডাক্তারদের টাকা দিতে হয়। টাকা দিলে সেই রোগীর অপারেশন যতœসহকারে করা হয়, না দিলে বিভিন্ন তালবাহানা করেন ডাক্তার ও অন্যান্য স্টাফরা।
বিশেষ করে অর্থপেডিক ও সিজারিয়ান রোগীদের ক্ষেত্রে টাকা না দিলে হাসপাতালে অপারেশন হয়। হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত কয়েকজন কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, হাসপাতালের বরাদ্দ ও বাস্তবায়িত কাজের অডিট, প্রতিদিনের খাবার বিতরণ, ওষুধ বরাদ্দ ও প্রতিদিনের বিতরণ দেখলেই শত শত অনিয়ম ও দুর্নীতি ধরা পড়বে। হাসপাতালের প্রধান যেখানে দুর্নীতি অনিয়মের জড়িত সেখানে অধিনস্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে কোন প্রতিকার পাওয়া যাবে না। তারা বলেন, এসব দুর্নীতিবাজদের কারণে জেলার সাধারণ মানুষ হাসপাতালে আসতে চায় না। একবারেই যাদের অন্য কোন উপায় নেই তারাই এখানে আসেন।
এসব বিষয়ে জানতে ঝিনাইদহ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ রেজাউল করিমের মোবাইলে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। ডাক্তারের এমন আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন, দৈনিক বীর জনতা’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈয়ব আলী জোয়ার্দ্দার। তিনি বলেন, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে দৈনিক বীর জনতা’য় ধারাবাহিকভাবে সংবাদ প্রকাশ করা হবে।
সংবাদটি শেয়ার করুন।
Copyright © 2024 সংবাদের আলো. All rights reserved.