জনগণ ও গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা খালেদা জিয়ার
সংবাদের আলো ডেস্ক: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য আগামী মঙ্গলবার (০৭ জানুয়ারি) লন্ডন যাচ্ছেন। কাতারের আমীরের পাঠানো ‘বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স’ বিমানে ওইদিন রাতে তিনি ঢাকা ছাড়তে পারেন। লন্ডন যাত্রার সব প্রস্তুতি শেষ হওয়ার মধ্যে আজ রোববার (০৫ জানুয়ারি) রাত ৯টায় রাজধানীর গুলশানে তার বাসা ‘ফিরোজা’য় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সাথে শুভেচ্ছা ও কুশল বিনিময় করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এ সময় দলের নীতি-নির্ধারকদের জনগণ ও গণতন্ত্রের পক্ষে একসাথে কাজ করার নির্দেশনা দেন বেগম জিয়া। ‘ফিরোজা’ থেকে বেরিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের কাছে বেগম জিয়ার লন্ডন যাত্রার দিনক্ষণ আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে বলেন, আল্লাহতালার অশেষ রহমতে জনগণের সবচাইতে প্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্যে আগামী ৭ জানুয়ারি রাতে লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করবেন। সেই কারণে আমরা জাতীয় স্থায়ী কমিটির সকল সদস্য উনার কাছে এসেছিলাম শুভেচ্ছা জানাতে। সেই সঙ্গে আমরা তার সঙ্গে আলাপ করেছি, কথা বলেছি। পরম করুণাময় আল্লাহতালার কাছে এই দোয়া করেছি, আল্লাহ তাকে সুস্থ করে আবার যেন আমাদের মাঝে, দেশের মানুষের মাঝে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন এবং গণতন্ত্রের জন্য আমাদের যে সংগ্রাম চলছে, সেই সংগ্রামে তিনি যেন নেতৃত্ব দিয়ে সংগ্রামকে সফল করতে পারেন। বাংলাদেশের মানুষেরও সেই প্রত্যাশা।তিনি বলেন, আমরা দোয়া করছি, তার (খালেদা জিয়ার) যাত্রা যেন সফল হয় এবং তিনি সুচিকিৎসা নিয়ে আবার ফিরে আসতে পারেন। কবে নাগাদ বেগম জিয়া ফিরবেন জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটা তো চিকিৎসকরা বলতে পারেন। আমরা তো বলতে পারি না। আমরা আশা করি, উনি চিকিৎসা শেষে খুব শিগগিরই দেশে ফিরে আসবেন। বিদেশে যাওয়ার প্রাক্কালে খালেদা জিয়া কোনো নির্দেশনা কিংবা বার্তা দিয়েছেন কিনা- জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ম্যাডাম নির্দেশনা দিয়েছেন যে, ‘একসাথে কাজ করো, জনগণের পক্ষে কাজ করো, গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করো।’ এর আগে রাত ৯টায় ‘ফিরোজা’য় একে একে প্রবেশ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হেসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। তারও আগে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির প্রেসিডেন্ট অলি আহমদ বিএনপি চেয়ারপারসনের সাথে সাক্ষাৎ করেন।কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা জেনে রাজকীয় বহরের এই বিশেষ বিমান দিয়েছেন। এই বিমানটি সর্বাধুনিক চিকিৎসা সুবিধা সম্বলিত এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে। লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, কিডনি সমস্যাসহ নানা স্বাস্থ্য জটিলতায় দীর্ঘদিন ভুগতে থাকা ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া প্রথমে লন্ডনে তার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে যাবেন। লন্ডনে ছেলের বাসায় কয়েকদিন থাকার পরে বিএনপি চেয়ারপারসন লিভারের উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন। যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটি হাসপিটালের মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি কেয়ার ইউনিটে খালেদা জিয়া লিভার প্রতিস্থাপনের চিকিৎসা নেবেন। ইতোমধ্যে তার যাবতীয় চিকিৎসার কাগজপত্র, বিভিন্ন পরীক্ষার রিপোর্টসমূহ সেখানে পাঠানো হয়েছে। এই হাসপাতালের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গত ২৬ অক্টোবর ঢাকায় এসে এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার লিভার ও পেটের ফ্লুইড জমা এবং রক্তক্ষরণ রোধে চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিশেষ পদ্ধতি টিআইপিস-টিপস সম্পন্ন করেছিলেন। তাদের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক টিম বিএনপি চেয়ারপারসনের লিভার প্রতিস্থাপন চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করবে। খালেদা জিয়া ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদির ভিসা পেয়েছেন। চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পথে তিনি পবিত্র ওমরাহ পালন করতে পারেন।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।