সংবাদের আলো ডেস্ক: মূল্যস্ফীতি, ডলার সংকট, ব্যাংক ও আর্থিকখাতে অস্থিরতাসহ নানা সংকটের মুখে নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব পেশ করেছে সরকার। যা দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ বাজেট। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের টানা চতুর্থ মেয়াদের প্রথম এ বাজেটে করহার বৃদ্ধি ও সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের পরিধি বাড়ানোসহ বেশ কিছু কৌশল নেওয়া হয়েছে।' এ বাজেটে ক্রীড়াঙ্গনের ইতিহাসে রেকর্ড বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে। গত অর্থবছরে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মোট সংশোধিত বাজেটের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৫২৩ কোটি ৩৪ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। এবার তা বাড়ানো হয়েছে আরও ৬৮৮ কোটি ৬০ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। ফলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পরিচালনা ও উন্নয়ন ব্যয় মিলিয়ে সর্বমোট বাজেট দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২১১ কোটি ৯৫ লাখ টাকাতে। যা ক্রীড়াঙ্গনের ইতিহাসে রেকর্ড বাজেট প্রস্তাব।মোট বাজেটের মধ্য থেকে উন্নয়ন খাতে ১ হাজার ২৩৪ কোটি ৮ লাখ টাকা এবং পরিচালন খাতে ৯৭৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে উন্নয়ন খাতের পরিমাণ ছিল ৬০১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা এবং পরিচালনা খাতের পরিমাণ ছিল ৯২১ কোটি ৬৫ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে গত অর্থ বছরে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মোট সংশোধিত বাজেটের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৫২৩ কোটি ৩৪ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে বিকাল ৩ টা থেকে ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’ শীর্ষক বাজেট বক্তব্য উপস্থাপন শুরু করেন অর্থমন্ত্রী।
এ সময় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার ক্রীড়ার মানোন্নয়ন এবং খেলাধুলার সুযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন ক্লাবে ক্রীড়া সামগ্রী ও আর্থিক অনুদান প্রদানসহ আধুনিক স্টেডিয়াম, জিমনেসিয়াম, সুইমিংপুলসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন করে আসছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আওতায় যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অধিকতর উন্নয়ন (১ম সংশোধিত') প্রকল্প, উপজেলা পর্যায়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্প, বরিশাল আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নতকরণ এবং বিদ্যমান জেলা সুইমিং পুলের উন্নয়ন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প। এ ছাড়াও ভোলা জেলার গজনবী স্টেডিয়ামের অধিকতর উন্নয়ন, ইনডোর স্টেডিয়াম এবং সুইমিংপুল নির্মাণ প্রকল্প, মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলা, ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলা শেখ রাসেল। মিনি স্টেডিয়ামের অধিকতর উন্নয়ন, গাজীপুর জেলা সদরে সুইমিং পুল নির্মাণ প্রকল্প, গাজীপুর জেলার শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়াম এবং পটুয়াখালীর কাজী আবুল কাসেম স্টেডিয়ামের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প। ‘চাঁদপুর জেলা স্টেডিয়াম, সুইমিং পুলের অধিকতর উন্নয়নসহ ইনডোর স্টেডিয়াম নির্মাণ, শরীয়তপুর জেলা সদরে ইনডোর স্টেডিয়াম ও টেনিস কোর্ট নির্মাণ প্রকল্প, কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠা মাইন উপজেলায় ‘রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ স্টেডিয়াম’ নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ প্রকল্প এবং গাজীপুর জেলার পুবাইল থানায় শেখ রাসেল মিনি স্পোর্টস গ্রাউন্ড নির্মাণের লক্ষ্যে জমি অধিগ্রহণ প্রকল্প।’ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ক্রীড়া অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়নের জন্য ১৩টি প্রকল্প চালু রয়েছে, যার মধ্যে মাঠ পর্যায়ে খেলাধুলা উৎসাহিত করার লক্ষ্যে অন্যতম হচ্ছে ‘উপজেলা শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ প্রকল্প’।
এরই ধারাবাহিকতায় আগামী বাজেটে বিভিন্ন ক্রীড়া অবকাঠামো নির্মাণসহ যুব ও ক্রীড়া উন্নয়নে ২০টি প্রকল্প গ্রহণের প্রস্তাব করা হয়। পাশাপাশি দক্ষ খেলোয়াড় তৈরির লক্ষ্যে দক্ষ ও অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক দ্বারা ক্রীড়া প্রতিভা অন্বেষণের মাধ্যমে বিভিন্ন বিভাগ থেকে প্রতিভাবান খেলোয়াড় খুঁজে দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক খেলাধুলার আয়োজন ও অংশগ্রহণের জন্য ক্রীড়া ফেডারেশন, এসোসিয়েশন ও সংস্থাসমূহকে নিয়মিত আর্থিক অনুদান ও ক্রীড়া সামগ্রী প্রদান করা হচ্ছে।
অন্যদিকে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রতি বছর বাজেটে যে খাতসমূহে বরাদ্দ দেওয়া হয়ে থাকে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বেকার যুবকদের আত্ম-কর্মসংস্থান সৃষ্টি, যুব কার্যক্রমের ওপর গবেষণা ও জরিপ, জাতি গঠনমূলক কাজে যুবকদের সম্পৃক্তকরণ ও ক্ষমতায়ন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ ও জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রদান, ক্রীড়া ক্ষেত্রে প্রতিভা অন্বেষণ, গ্রামাঞ্চলে ক্রীড়া পরিবেশ সৃষ্টি ও দক্ষ ক্রীড়াবিদ তৈরি, বিভিন্ন ক্রীড়া সংস্থাকে অনুদান ও অস্বচ্ছল ক্রীড়াবিদদের কল্যাণ অনুদান প্রদান ও ক্রীড়া স্থাপনা নির্মাণ, উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ।
সংবাদটি শেয়ার করুন।
Copyright © 2024 সংবাদের আলো. All rights reserved.