‘কোপা’ জেতার মতো দল ব্রাজিল না: মিশা সওদাগর
সংবাদের আলো ডেস্ক: ম্যানুয়েল উগার্তের নেয়া শট বুঝতে পারলেন না ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকার। বল জড়াল জালে। ৪-২ ব্যবধানে টাইব্রেকার জিতে সেমিফাইনালে পা রাখল উরুগুয়ে। টানা তিনবার হারের পর উরুগুয়ে কোচ মার্সেলো বিয়েলসা পেলেন ব্রাজিলের বিপক্ষে সাফল্যের দেখা। ব্রাজিলকে থামতে হলো কোয়ার্টার ফাইনালে। ২০২২ সালের বিশ্বকাপের পর ২০২৪ সালে এসেও সেলেসাওরা বিদায় নিলো টাইব্রেকারে।আর ব্রাজিলের হারে মন ভেঙেছে দলটির অনুসারীদের। দেশের শোবিজ অঙ্গনের প্রভাবশালী তারকা মিশা সওদাগরও একজন ব্রাজিল ভক্ত। প্রিয় দলের হারে রীতিমতো হতাশ এই অভিনেতা!ঢাকাই সিনেমার খলনায়ক ও বাংলাদেশ শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর ফুটবলে ব্রাজিল দলকে সমর্থন করেন। কিন্তু কোপা আমেরিকার এবারের আসর রীতিমতো হতাশ করেছে তাকে। কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে উরুগুয়ের বিপক্ষে মাঠে দাঁড়ায় ব্রাজিল। বাংলাদেশ সময় রবিবার সকাল সাতটায় সাধারণ দর্শকদের মতো মিশা সওদাগরও ম্যাচটি দেখতে বসেন। গোলশূন্য ম্যাচটি শেষমেশ টাইব্রেকারে গড়ালে সেলেসাওদের দুটি ভুল শটে স্বপ্নভঙ্গ হয় ব্রাজিলের।কোয়ার্টার ফাইনালের এই ম্যাচে ব্রাজিলের হারের পর সামাজিক মাধ্যমে হতাশা প্রকাশ করতে থাকেন ব্রাজিল ভক্ত-সমর্থকরা। একই হতাশা দেশের শোবিজ অঙ্গনেও। তাইতো ম্যাচ হারার পরই সামাজিক মাধ্যমে একটি ছবি যুক্ত করে ব্রাজিলের পারফরম্যান্স নিয়ে সমালোচনা করেন মিশা সওদাগর। ব্রাজিলের মত সর্বোচ্চ বিশ্বজয়ী দলের থেকে এর চেয়ে ভালো কিছু আশা করেছিলেন তিনি। পাশাপাশি এই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়নদের জন্যও আগাম শুভকামনা জানান এই খলনায়ক।রবিবার (৭ জুলাই) সকালে এক ফেসবুক পোস্টে মিশা লেখেন, ‘আমি ব্রাজিলের সমর্থক, কিন্তু আজকে ব্রাজিল যেভাবে খেললো, বা গোটা টুর্নামেন্ট যেই খেলা দিয়েছে, সেটা দিয়ে আর যাই হোক কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো দল না; যত ভালো প্লেয়ারই থাকুক না কেন। শুভকামনা নতুন কোনো চ্যাম্পিয়নের জন্য।পোস্টটি শেয়ার করতেই মিশার ভক্ত-অনুরাগী ও ব্রাজিল সমর্থকেরা তাকে সহানুভূতি জানান। ব্রাজিলের এমন পরাজয়ে যে ব্যথিত সবাই তা মিশার কমেন্ট বক্স দেখেই বোঝা যাচ্ছে।উল্লেখ্য, রোববার (৭ জুলাই) লাস ভেগাসে টুর্নামেন্টের চতুর্থ ও শেষ কোয়ার্টারে মুখোমুখি হয় ব্রাজিল উরুগুয়ে। ম্যাচটিতে ছন্দমায় খেলের চেয়েও মারামারিই যেন বেশি ছিল। ছিল ফাউলের ছড়াছড়ি, তার সঙ্গে সমানতালে চলছিল মারামারির মহড়া। কিছু আক্রমণ হলেও গোল করতে পারেনি কেউ। এই অর্ধের শুরুর দিকে ব্রাজিল তেমন আক্রমণে যেতে পারেনি। অন্যদিকে সেলেসাওদের উপর চাপ তৈরি করতে থাকে উরুগুয়ে।ম্যাচের ১৮ মিনিটে ডারইউন নুনেজের একটি হেড রুখে দেন ব্রাজিলের ডিফেন্ডাররা। এক মিনিট পর আবারও আক্রমণে আসে উরুগুয়ে। এবার কর্নার থেকে আসা বল ব্রাজিলের ডি-বক্সের মধ্যে পড়লে সেখানে শট নেন নিকোলাস ডে লা ক্রুস। তার ক্রস থেকে মাথিয়াস ওলিভেরা হেড করলেও সেটি গোলবারের বাইরে দিয়ে চলে যায়।এরপর ৩৫ মিনিটে গোলের দারুণ একটি সুযোগ তৈরি করেছিল উরুগুয়ে। নাহিতান নন্দেজের ক্রস থেকে নুনেজের হেড গোলবারের সামান্য উপর দিয়ে চলে যায়। সেখান থেকে কাউন্টার অ্যাটাকে যায় ব্রাজিল। রাফিনহা একাই উরুগুয়ের ডি-বক্সে বল নিয়ে ঢোকেন। তবে গোলরক্ষককে পরাস্ত করে লক্ষ্যভেদ করতে না পারলেও কর্নার আদায় করে নিয়েছেন। অবশ্য কর্নার থেকেও সফল হতে পারেননি বার্সেলোনোর এই ফরোয়ার্ড।৪৩ মিনিটে উরুগুয়ের পক্ষে আবার আক্রমণে আসেন লা ক্রুস। ম্যানুয়ের উগার্তের অ্যাসিস্ট থেকে পাওয়া বল গোলবারের বাঁপাশ দিয়ে মেরে দেন তিনি। ইনজুরি সময়ে আরও একবার আক্রমণে আসে ব্রাজিল। আন্দ্রিয়েস গুইমারেসের অ্যাসিস্ট থেকে বাঁপায়ের শট নেন রাফিনহা। তবে গোলরক্ষক সার্জিও রচেটের দেয়াল ভাঙতে পারেননি তিনি। গোলশূন্য সমতায় বিরতিতে যায় দুই দল।ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে আক্রমণে এগিয়ে ছিল উরুগুয়ে। ৫৩ তম মিনিটেই দুইবার গোলচেষ্টা চালায় তারা। যেখানে প্রথম আক্রমণ রুখে দেন ব্রাজিলের ডিফেন্ডাররা। পরেরটি চলে যায় গোলবারের বাইরে দিয়ে। ৬৮ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড লুকাস পাকেতার একটি আক্রমণ ব্লক করে দেয় উরুগুয়ের রক্ষণভাগ।এরপর ৭২ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রদ্রিগোকে বাজে ফাউল করে লালকার্ড দেখেন উরুগুয়ে ডিফেন্ডার। উরুগুয়ের অর্ধে বল নিয়ে আক্রণে যাচ্ছিলেন রদ্রিগো। এমন সময় পেছন থেকে এসে রদ্রিগোকে থামানোর জন্য পায়ের আক্রমণ করেন নন্দেজ। এতে প্রথমে তাকে হলুদকার্ড, পরে ভিএআর দেখে লালকার্ড দেখানের সিদ্ধান্ত নেন রেফারি। ফলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় উরুগুয়ে।উরুগুয়ে ১০ জনের দলে পরিণত হলেও সুবিধা আদায় করে নিতে পারেনি ব্রাজিল। অথচ তখন ম্যাচের বাকি ১৫ মিনিট। কিন্তু এই সময় কাজে লাগাতে পারেনি সেলেসাওরা। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে গড়ালে হারই হজম করতে হয় দরিভাল জুনিয়রের শিষ্যদের।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।