কোটা বাতিলের দাবি বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কে অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ-সমাবেশ
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কে দেড় ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শনিবার (৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের আশেকপুর বাইপাস এলাকায় অবস্থান নিয়ে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন। এদিন দুপুর ১২টা পর্যন্ত তারা মহাসড়ক অবরোধ রেখে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। অবরোধের ফলে মহাসড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে উভয় পাশে ২০ কিলামিটার এলাকাজুড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে চরম দুর্ভোগের শিকার হয় সাধারণ যাত্রীরা। ছাত্র সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় অনেকে হাতে ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৌষম্যর ঠাঁই নাই’, ‘একাত্তরের বাংলায় বষম্যর ঠাঁই নাই’, ‘কোটা প্রথা নিপাত যাক- মধাবীরা মুক্তি পাক’ ইত্যাদি স্লাগান দেন। এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, বৌষম্য থেকে মুক্তির জন্য দেশ স্বাধীন হয়েছে। স্বাধীন বাংলায় সেই বষম্য যেন আর না থাকে তাই সাধারণ শিক্ষার্থীরা আজ জেগে উঠেছেন। দেশ বর্তমান সময়ে অনেক শিক্ষার্থী চাকরি না পাওয়ার হতাশায় ভুগছেন। তারা বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা বহাল রেখে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে। কোটা থাকার কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ছেন। অথচ কোটাধারী শিক্ষার্থীরা বেশি সুবিধা পাচ্ছেন। তাই তাঁরা বিদ্যমান কোটাব্যবস্থার সংস্কার চান। চাকরিতে কাটাব্যবস্থা সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য বিষফোড়া।
মহাসড়কে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী তফিকুর রহমান বলেন, ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মধ্যোভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে। ১৮-এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সকল গ্রেড) অযৌক্তিক ও বৌষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায় নিয়ে আসতে হবে। সক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী কবলে অনগ্রসর জনগাষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কাটায় যাগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলাতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।
দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। আন্দোলনরত অপর শিক্ষার্থী আখতারুজ্জামান সাজু বলেন, চাপিয়ে দেওয়া বৌষম্যমূলক কোটা পদ্ধতির ‘কবর রচনা’ করতে আমরা একত্রিত হয়েছি। যেকোনো বাধাকে উপেক্ষা করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। আমাদের দাবি একটাই- ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহাল করতে হবে। পরিপত্র পুনর্বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (১ম থেকে ৪র্থ শ্রণি) সর্বাচ্চ ১০ শতাংশ কোটা রেখে ‘কোটা সংস্কার’ করা।
মহাসড়কে বিক্ষোভ-সমাবেশ চলাকালে পুলিশ সদস্যরা উপস্তি ছিলেন। দেড় ঘণ্টা মহাসড়ক বিক্ষোভ-সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা আবার মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চলে যান। টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লোকমান হোসেন জানান, শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ-সমাবেশ শেষে মহাসড়ক থেকে সরে যাওয়ার পর মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।