কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: সরকারি গাড়ির অপব্যবহার করা ও ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার না করতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের। অথচ কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএন্ডএফপিও) ডা: মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ তার ব্যক্তিগত কাজেই বেশিরভাগ সময় ব্যবহার করছেন সরকারি গাড়ি। এতে একদিকে যেমন জ্বালানি তেল বেশি যাচ্ছে সরকারি কোষাগার থেকে। তেমনি ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগের। অনুসন্ধানে জানা গেছে, চলতি বছরের গত ২৮ এপ্রিল উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএন্ডএফপিও) হিসেবে যোগদান করেন ডা: হারুন অর রশিদ। এর আগে নিয়মিত আবাসিক সার্জন (অর্থোপেডিক্স) ডা: মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ (কোড-১৩০৬১৮), এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, দিনাজপুর, দিনাজপুর সদর, দিনাজপুর, রংপুর, মূল পদঃ আবাসিক সার্জন (অর্থোপেডিক্স) হিসাবে ছিলেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে সরকারের পক্ষ থেকে সরকারি কাজে ব্যবহারের জন্য কালো রংয়ের উন্নতমানের একটি গাড়ি দেয়া হয়। নিয়ম রয়েছে সরকারি কাজ ছাড়া উপজেলার বাইরে গাড়ি নিয়ে যেতে হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ও সংশ্লিষ্ট কারণ থাকতে হবে। অথচ চিকিৎসক ডা: মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ উপজেলার বাইরে প্রতিনিয়ত কুড়িগ্রাম জেলা সদরে আসেন এমনকি রংপুর বিভাগীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গাড়ি নিয়ে নিজেই ড্রাইভ করে যান। উপজেলা থেকে জেলার দুরত্ব প্রায় ২০কিলোমিটার এবং রংপুরের দুরত্ব প্রায় ৬০ কিলোমিটার।
আরও অভিযোগ আছে গাড়ি নিয়েই শহরের বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রে রোগী দেখেন এই চিকিৎসক। অন্যদিকে ব্যক্তিগত কাজে ও রংপুরে গাড়ি মেরামত করার জন্য নিজেই গাড়ি চালায় সরকারি গাড়ি ব্যবহার করায় বদনাম ছড়াচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগের। নাম না প্রকাশে বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএন্ডএফপিও) তার বাসায় নিজের রুমে থাকার জন্য এসি ব্যবহার করেন। এ ব্যাপারে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ। খোজ নিয়ে জানা যায়, ড্রাইভার না থাকায় গত ২১ ও ২২ অক্টোবর ২০২৪ইং ডা: মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ নিজেই গাড়ি ড্রাইভ করে কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন অফিসে জরায়ু মুখের ক্যান্সার ভ্যাকসিন ট্রেনিংয়ে যান।
এর আগেও কয়েকবার গিয়েছিলেন তিনি। গাড়ি না চালালে নষ্ট হতে পারে সেই অজুহাতও দেখান তিনি। এর আগে গত ৭ ও ৮ অক্টোবর ২০২৪ আরডিআরএস বাংলাদেশে রংপুরে ইপিআই এর মিটিংয়ে নিজেই গাড়ি ড্রাইভ করে যান এই চিকিৎসক। এমনকি রাত দুটা তিনটা পর্যন্ত অফিসের কাজ করার পাশাপাশি আরএমও’র দায়িত্ব পালন করার কথা জানিয়েছেন অনেককে। এ বিষয় জানতে চাইলে উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএন্ডএফপিও) ডা: মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, গাড়ি আমি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করি না।
গত ১ জুলাই থেকে ড্রাইভার নেই। এ কারনে সরকারি নিয়ম মেনে আমার নিজের ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকায় নিজেই গাড়ি চালিয়ে সরকারি কাজ করছি। এ ক্ষেত্রে সিভিল সার্জনের অনুমতি নেয়া আছে। জানতে চাইলে, উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আতাউর রহমান বলেন, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ কেউ করেনি। তাছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো সিভিল সার্জনের অধিনে পরিচালিত হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা: মো: মন্জুর এ মুর্শেদ এর মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।