রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

কাজিপুরের মনসুর নগরের এক ছাত্রদল নেতা হত্যা মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড !

                            কাজিপুরের মনসুর নগরের এক ছাত্রদল নেতা হত্যা মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ! - সংবাদের আলো

আজিজুর রহমান মুন্না: সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার মনসুর নগরের  এক ছাত্রদল নেতা  হত্যা মামলায় ২  জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড  ও ২ জনকে ১০ বছরের কারাদন্ড দিয়েছে আদালত।

সোমবার ( ২৪ জুলাই)  দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফজলে খোদা মোঃ নাজির এ রায় প্রদান করে।

ভিকটিম ইকবাল (২০) হত্যার অপরাধে আসামী মোঃ মজনু মিয়া ওরফে মজনু (৪২) কে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ০১ বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং ভিকটিম শফিকুল ইসলামকে হত্যার লক্ষ্যে ছুরিকাঘাত ও মারপিট করার অপরাধে আসামী মোঃ মজনু মিয়া ও দীল বাবু কে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ০১ বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং ভিকটিম শফিকুল ইসলামকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিটে সহযোগিতা করার অপরাধে আসামী মোঃ রবিউল ও মোঃ রেজাব পাইত্যা কে ১০ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ০৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০০৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বরে জেলার কাজিপুর উপজেলার মাজনাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাদ ঢালাইয়ের কাজ চলতেছিল। ঐ দিন বেলা ১০/১১ ঘটিকায় মাজনাবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির নেতা ইকবাল এর নেতৃত্বে তার ভাই লাল বাবু, মজনু মিয়া, রবিউল, রেজাব ওরফে পাইত্যা সহ আরো ৭/৮ জন উক্ত উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে বিদ্যালয় নির্মাণ কাজের ঠিকাদার হারুন অর রশিদের নিকট ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে।

ঠিকাদার চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তারা ছাদ ঢালাইয়ের কাজ বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, প্রধান শিক্ষকের ভাই শফিকুল ইসলাম সহ স্থানীয় লোকজনের বাধার মুখে ইকবাল তার লোকজন সহ চলে যান এবং শফিকুলকে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়। অতঃপর ছাদ ঢালাই এর কাজ পুনরায় শুরু হয়। পরদিন ভিকটিম শফিকুল ইসলাম দোকানে ডাল, চিনি কেনার উদ্দেশ্যে রওনা হলে বৃষ্টি আসলে শফিকুল স্কুলের পাশে আঃ ছাত্তার এর দর্জির দোকানে গিয়ে অবস্থান নেয়।

আগের দিনের আক্রোশের জের হিসেবে তখন ইকবালের নেতৃত্বে তার লোকজন আঃ সাত্তারের দর্জির দোকানে গিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে শফিকুলকে আক্রমণ করে ইকবাল শফিকুলকে কিল-ঘুষি মারে ও লাল বাবু ছাতা দিয়ে আঘাত করে ও মজনু ডেগার দিয়ে পরপর  ৫টি আঘাত করে জখম করেন। ৫ম আঘাতটি শফিকুল সরে যাওয়ায় ইকবালের বুকের ডান পাশে লেগে ইকবাল ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। তখন শফিকুল আহত অবস্থায় দোকান থেকে পালিয়ে যান। অতঃপর ইকবালের ভাই লাল বাবু বাদী হয়ে কাজিপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে।

পরবর্তীতে মামলাটি তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসলে তদন্তকারী অফিসার নিজেই বাদী হয়ে শফিকুলকে আক্রমণকারী ইকবালের সাথে থাকা আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। রাষ্ট্র পক্ষ অভিযোগ প্রমাণের জন্য মোট ৩৭ জন সাক্ষী পরীক্ষা করেন। সাক্ষ্য সমাপ্তি অন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় জেলা ও দায়রা জজ আসামী মোজাম ও মোজাম্মেল, জাহাঙ্গীর আলম, মোঃ রবিউল, লাল বাবু, মোঃ মাসুম বাবু বাবুর উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করে।

আসামী মজনু মিয়া ওরফে মজনু, রেজাব  পাইত্যা পলাতক আসামী মোজাম্মেল হক, জাহাঙ্গীর ও মাসুম বাবু এর বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহভাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে এ মামলার অভিযোগ থেকে খালাস প্রদান করা হয় এবং  আসামী রবিউল, লাল মিয়াকে কারাগারে প্রেরণ করার নির্দেশ দেন ।

রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন  পি. পি অ্যাডভোকেট  আব্দুর রহমান এবং আসামী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মোঃ শওকাত হোসেন ও অ্যাডভোকেট  মোঃ গোলাম হায়দার।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।

----- সংশ্লিষ্ট সংবাদ -----

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়