সোমবার, ৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

এস আলমকে লেলিয়ে দিয়ে ইসলামী ব্যাংককে শেষ করে দিয়েছে: শফিকুর রহমান

সংবাদের আলো ডেস্ক: জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘সবচেয়ে শক্তিশালী এ দেশের আপামর জনগণের ব্যাংক ছিল ইসলামী ব্যাংক। ডাকাত এস আলমকে লেলিয়ে দিয়ে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে সেই ব্যাংকটাকে শেষ করে দিয়েছে। আমরা শুনেছি, এই ব্যাংকের টাকা চুরি করেছে শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, একই পরিবার। এখন এই চুরির দায়ে তারা লন্ডনেও ধরা খেয়েছে। ’আজ শনিবার সকালে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে জামায়াতের জেলা শাখা আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের আমির এসব কথা বলেন। কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের আমির আবুল হাশেমের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সেক্রেটারি সুজা উদ্দিন জোয়ার্দ্দার। এই সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে সেখানে সংসদ সদস্য এবং ভাগ্যক্রমে তিনি হয়েছেন মন্ত্রীও। এখন সেখানকার দুর্নীতি দমন কমিশন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এটা বাংলাদেশ এবং জাতির জন্য লজ্জার। আমাদের লজ্জা হলে কী হবে? ওদের কোনো লজ্জা নেই।’আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘দেশে যেখানেই তাদের হাঁড়িতে হাত ঢুকছে, সেখানে টাকার খনি। এই টাকা এরা পেল কোথায়? তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর পিয়নের অ্যাকাউন্টে ছিল ৪০০ কোটি টাকা। পিয়নের যদি এত টাকা হয়, মালিকের কত টাকা? হ্যাঁ, মালিকের টাকাও বের হয়ে আসতেছে। এই কুষ্টিয়ার পাশেই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। এখান থেকে মালিকের পরিবার শুধু একটা প্রকল্প থেকে ৫৭ হাজার কোটি টাকা চুরি করেছে। এইভাবে যেখানেই মেগা উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে, সেখানেই মেগা ডাকাতি করা হয়েছে।’ শফিকুর রহমান বলেন, একটা পদ্মা সেতু তৈরি করতে যে পরিমাণ টাকা খরচ হয়েছে, তা দিয়ে অন্তত চারটা পদ্মা সেতু তৈরি করা যেত। তাহলে বাকি তিনটা গেল কোথায়? হিসাব একেবারেই পরিষ্কার। দেশের টাকা দিয়ে যাঁরা বিদেশে বেগমপাড়া গঠন করেছেন, তাঁরাই এই টাকা চুরি করেছেন। কিন্তু চোরের মার বড় গলা। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের পারিবারিক বিষয় তুলে ধরে শফিকুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ ছিল তাদের ইনকাম সোর্সের জায়গা। আর তাদের কলিজা ছিল বিশ্বের অন্য জায়গায়। এই দেশের প্রতি তাদের দরদ থাকবে না, এটাই স্বাভাবিক। তাদের সব পরিবার, বিদেশে কোথায়, বেগমপাড়ায়।’সম্মেলনে শফিকুর রহমান বলেন, ‘যারা স্বাধীনতার লগ্নে জাতিকে ওয়াদা করেছিলেন, সব অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার। তারা কেউ অধিকার ফিরিয়ে দেননি। তারা কথা রাখেননি। তারা দফায় দফায় জাতির সঙ্গে বেঈমানি করেছেন। জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। এ দেশ আমাদের সব ধর্মের সব বর্ণের মানুষের। আমরা যুগ যুগ ধরে এই দেশে শান্তিপূর্ণভাবে পাশাপাশি বসবাস করে আসছি। পূর্বে আমরা দুই দুইবার স্বাধীন হয়েছিলাম, ৪৭-এ, ৭১-এ।’ সাম্যের বাংলাদেশ গড়তে চান জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমরা এই দেশে আর কোনো মাইনরিটি-মেজরিটি এই কথা শুনতে চাই না। কিসের মেজরিটি আর মাইনরিটি, বাংলাদেশে যারা জন্মগ্রহণ করবে, তারা সবাই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এই দেশের গর্বিত মর্যাদাবান নাগরিক। রাষ্ট্রের সংবিধান সবাইকে সমান অধিকার দিয়েছে। আল্লাহর সংবিধানও তাদের সমান অধিকার দিয়েছে।’ দীর্ঘ ১৮ বছর পর প্রকাশ্যে কর্মিসভাকে কেন্দ্র করে কুয়াশা ও কনকনে শীত মাড়িয়ে আজ সকাল থেকেই বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজার হাজার জামায়াতের কর্মী মিছিল নিয়ে সরকারি কলেজ মাঠে হাজির হন। সকাল ৯টায় পুরো মাঠ কানায় ভরে যায়। আশপাশের সড়কেও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের দেখা যায়। তারা নানা রকম স্লোগানে মুখরিত করে রাখেন কলেজ মাঠ।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়