নিজস্ব প্রতিবেদক: একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির ল্যাব সহকারী রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে। রবিউল ইসলাম জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মোলামগাড়ীহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ল্যাব সহকারী। তিনি উপজেলার জিন্দারপুর ইউনিয়নের কাদিরপুর গ্রামের বাসিন্দা।' জানা গেছে, পরীক্ষার ফলাফলের ভয়ভীতি দেখিয়ে একাধিক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করেছেন রবিউল। শিক্ষক না হয়েও নিয়মিত পাঠদান করাতেন তিনি। স্কুলের বই কোচিংয়ে সংরক্ষণ, ভালো ফলাফলের লোভ দেখিয়ে নিজ কোচিংয়ে ভর্তি, ছাত্রীদের দিয়ে গৃহস্থালির কাজ করানোসহ নানা অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রবিউল তার প্রাইভেট কোচিং সেন্টারের নামে একটি চাতালের গরুর সেটে প্রাইভেট পড়ান এবং তার পূর্বপাশে আরেকটি গোপন কক্ষ রয়েছে যেখানে সরকারি নবম দশম শ্রেণিসহ বিভিন্ন শ্রেণির ২০২৪ সালের বোর্ড বই সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে রেখেছেন।
এছাড়াও দীর্ঘদিন চাকরির সুবাদে ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে তথ্য গোপন করে বিয়ে করে। কিছুদিন পরে নবম শ্রেণির আরও এক ছাত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। পরে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেন। সম্প্রতি আবারও ১০ম শ্রেণির আরেক ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে৷ গত বুধবার (২৫ এপ্রিল') এ নিয়ে রবিউলের প্রাইভেট কোচিংয়ে গিয়ে ওই ছাত্রীর অভিভাবক প্রতিবাদ করলে দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা বলেন, বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দিয়েছি যাতে আমার মেয়ে নিরাপদে থাকে। কিন্তু সেই বিদ্যালয়ের শিক্ষকই আমার মেয়েকে অনৈতিক প্রস্তাব দেয়। মেয়েকে ওই স্কুলে পাঠাব না। পরীক্ষাও দিতে দিব না। স্কুল থেকে সব মেয়েদের বলেছে কেউ যেন আমার মেয়ের সঙ্গে কথা না বলে।
বললে তাদের পরীক্ষায় খবর আছে। এসব কারণে আমার মেয়ে মন খারাপ করে আছে। ওই স্কুলের শিক্ষকরাও তার পক্ষ নেয়। প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ করলে তিনি আমাদের বলে তোমরা টিসি নিয়ে যাও। অভিযুক্ত রবিউল ইসলাম অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, আমার ভুল হয়েছে। প্রথমে আমি বাল্য বিয়ে করেছিলাম। এই স্কুলে আমার স্ত্রীকে ভর্তি করিয়েছি। ছাত্রীরা সকলে আমার ভাতিজি হয়। আমি ল্যাব এসিস্ট্যান্ট পদে চাকরি করি আমার ক্লাস নেওয়ার নিয়ম নাই। প্রধান শিক্ষকের অনুরোধে আমি ক্লাস নিয়েছি। আপনারা তদন্ত করে দেখতে পারেন। এবারের মত আমাকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখেন স্যার। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মোসাদ্দেক বলেন, ওই শিক্ষার্থীসহ তার বাবা-মা আমার কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছিল।
আমি উনাদেরকে লিখিত অভিযোগ করতে বলেছিলাম। আমার কাছে টিসি চেয়েছিল আমি উনাদেরকে বললাম যেহেতু ১০ম শ্রেণিতে পড়ে পরীক্ষার আর কয়েক মাস আছে। স্কুল বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীর বাবা-মা আমার কাছে এসে তারা মীমাংসা করার চেষ্টা করেছে। ওই ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্কের কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও তারা যদি অভিযোগ করে তদন্ত করে দোষী প্রমাণিত হলে তাকে চাকরীচ্যুত করা হবে।' কালাই উপজেলার নির্বাহী অফিসার আবুল হায়াত জানান, এই অভিযোগটি কোন এক মাধ্যমে আমাদের কাছে এসেছে। আমরা তদন্ত শুরু করেছি। তদন্ত শেষ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
সংবাদটি শেয়ার করুন।
Copyright © 2024 সংবাদের আলো. All rights reserved.