রায়হান আলী উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জ উল্লাপাড়ার চলনবিলে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণে দেশীয় মাছের শুটঁকি উৎপাদন হয়। শুটকির গুণগত মান ভালো হওয়ায় এই এলাকার শুটকির চাহিদা সারাদেশে। চলনবিল অধ্যুষিত উপজেলার বড়পাঙ্গাসী, উধুনিয়া,লাহিড়ী মোহনপুর এলাকার অধিকাংশ মানুষ কৃষি ও মৎস্যজীবি পেশা কে বেছে নিয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে কৃষি কাজ এবং বন্যায় মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। গত মৌসুমে চলনবিলে অন্তত ৬৫০ মেট্রিকটন দেশীয় মাছ পাওয়া গেছে। এছাড়াও শুঁটকি উৎপাদন হয়েছে ৯০ মেট্রিকটন। চলতি মৌসুমে শুটকি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৯৫ মেট্রিকটন থাকলেও এবছর উৎপাদন কম হওয়ার শঙ্কা রয়েছে ।
চলনবিলের অধিকাংশ দেশীয় মা মাছ রিংজাল, চায়না জাল এবং কারেন্ট জালের ফাঁদে মা মাছ নিধনের ফলে মাছের আমদানি অনেক কমে গেছে। শুঁটকি পল্লী গুলো এবছর অনেকটাই ফাঁকা দেখা গেছে। এতে শুটকি ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে। এই শুঁটকি উৎপাদন কে কেন্দ্র করে অনেক মৌসুমি ব্যবসায়ী গড়ে উঠেছে। ব্যবসায়ীরা যশোর, রংপুর, ঢাকায় শুটকি বিক্রি করে থাকে। প্রতিবছর শুটকি পল্লী গুলো দেশীয় মাছের আমদানিতে কর্মীদের ব্যস্ততা দেখা দিলেও এবছর অনেকটাই ভিন্ন। দেশীয় মাছের আমদানি কম হওয়াতে শুটঁকি উৎপাদনের সাথে জড়িত শ্রমিকদের কাজ কমে যাওয়াতে তাদের জীবিকার ওপর প্রভাব পড়েছে। বড়পাঙ্গাসী ইউনিয়নের খাদুলি গ্রামের জয়ন্তী দাস, খুশী খাতুন, শাহিনুর খাতুন জানান তারা প্রতি বছর বন্যার শুরু থেকে অন্তত ৮ মাস শুটঁকি পল্লীতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
কিন্তু এবছর দেশীয় প্রজাতির মাছ কম হওয়াতে তাদের কাজ অনেক কমে গেছে, এতে তারা অনেক কষ্টে আছে। তিনি আরো জানান চলনবিলে রিংজাল,চায়না জাল,কারেন্ট জাল দিয়ে প্রচুর মা মাছ নিধন করেছে এজন্য এখন মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। প্রশাসনের নজরদারি বাড়াতে হবে এতে আমাদের জীবিকা এবং শুঁটকি উৎপাদন বাড়বে। বড়পাঙ্গাসীর শুঁটকি ব্যবসায়ী বায়োজিদ হোসেন জানান প্রতি বছর ৩ হাজার মন শুঁটকি উৎপাদন করলেও এবছর অনেকটাই কম। তিনি বলেন চলনবিলে প্রতিবছর পানি কমে গেলে প্রচুর দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া গেলেও অনেক মাছ অনেক কম। অসাধু মৎস্য শিকারীরা মা মাছ নিধনের ফলে শুটকি উৎপাদন অনেক কমে গেছে।
তিনি চলনবিলের শুকটি যশোর, রংপুর, ঢাকায় বিক্রি করেন। উল্লাপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আতাউর রহমান জানান ২০২৩-২৪ চলন বিল উল্লাপাড়া অংশ মাছের উৎপাদন (প্রায়) ৬৬০ মেঃটন (প্রায়), তবে এবছর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে কিনা এখনো জানা যাচ্ছে না। তবে চলনবিলে মা মাছ নিধনের বিষয়ে তাদের অভিযান অব্যহত ছিলো।