বৃহস্পতিবার, ২৪শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের ‌‌‌’মাইম্যানরা’ ধরাশায়ী

নিজস্ব প্রতিবেদক: উপজেলা নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপ সম্পন্ন হয়েছে। এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনগুলোর ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, মন্ত্রী-এমপিদের পছন্দের প্রার্থীরা অর্থাৎ তাদের ‘মাইম্যানরা’ এবার নির্বাচনে বিপুলভাবে পরাজিত হচ্ছেন। সারা দেশে আওয়ামী লীগের অনেক মন্ত্রী, এমপি এবং হেভিওয়েট নেতাদের পছন্দের প্রার্থীদেরকে হারিয়ে দেওয়ার উত্সব শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। ইতোমধ্যে গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের পছন্দের প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন। এই পরাজয়ের সূত্র ধরে এলাকায় বেশ কয়েকদিন উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সহিংসতার ঘটনা ঘটেছিল।’ টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাকের ছোট ভাই উপজেলা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন। বরিশালে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতা আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ পছন্দের দুই প্রার্থী উপজেলা নির্বাচনে বিপুল ভোটে পরাজিত হয়েছেন।

সাবেক অর্থমন্ত্রী এবং কুমিল্লা থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের এমপি আ হ ম মোস্তফা কামাল কামালের ছোট ভাই কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলায় শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছেন। তিনি উপজেলা নির্বাচনে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন। গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল অবসরপ্রাপ্ত ফারুক খানের পছন্দের প্রার্থী আবুল কাসেম রাজু পরাজিত হয়েছেন। এই নির্বাচনের জন্য তিনি ব্যাপকভাবে প্রচার প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। এভাবে সারা দেশে যেখানে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপিরা তাদের স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন, সেখানেই মন্ত্রী, এমপিদের স্বজনদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আওয়ামী লীগের তৃণমূল শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছে।

শরীয়তপুর সদরের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপুর চাচাত ভাই বিল্লাল হোসেন দিপু মিয়া, গাইবান্ধা সদর উপজেলার সংসদ সদস্য শাহ সারোয়ার কবিরের প্রার্থী মোহাম্মদ ইফতেকুর রহমান, মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলা সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি সমর্থিত প্রার্থী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশিদ পরাজিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বলছেন, এই পরাজয় হল তৃণমূলের ক্ষোভ এবং অভিমানে স্বতঃস্ফূর্ত বহিঃ প্রকাশ। যেখানে মন্ত্রী, এমপিরা তাদের নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তিদেরকে দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বা তৃণমূলের মতামতের বাইরে গিয়ে প্রার্থী করেছেন, সেখানেই প্রতিবাদ হয়েছে, প্রতিরোধ হয়েছে।’ আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলছেন, যেখানে তৃণমূলের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে সংসদ সদস্যরা প্রার্থী দিয়েছেন সেখানে কোন সমস্যা হয়নি। আওয়ামী লীগের ঐক্যমতের প্রার্থী নির্বাচনে ইতিবাচক ফলাফল করেছে।

কিন্তু যেখানে যেখানে দলের তৃণমূলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে মন্ত্রী, এমপিরা জোর করে তাদের পছন্দের প্রাথী চাপিয়ে দিয়েছেন সেখানেই ঘটেছে বিপর্যয়। যেমন ড. আব্দুর রাজ্জাকের ভাইকে যেন প্রার্থী না করা হয় এজন্য তৃণমূল একাটাট্টা হয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাজ্জাক তার ভাইকে মনোনয়ন থেকে সরিয়ে দেননি। যার ফলে দেখা গেছে যে, ড. রাজ্জাকের পছন্দের প্রার্থী সেখানে ধরাশায়ী হয়েছে। একই রকম ঘটনা ঘটেছে সর্বত্র। এটি আওয়ামী লীগের তৃণমূলের শক্তির জয় বলে অনেকে মনে করছেন। অনেকে মনে করছেন যে, এটি আওয়ামী লীগের জন্য একটি বড় ধরনের বার্তাও বটে।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।

----- সংশ্লিষ্ট সংবাদ -----

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়