বুধবার, ২৩শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

ইসলামী ব্যাংকে এস আলমের ৭৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ

সংবাদের আলো ডেস্ক: কোটা সংস্কার আন্দোলনের মুখে সরকার পতনের পর একে একে বেরিয়ে আসছে বড় বড় দুর্নীতির বিষয়গুলো। সব মিলে দেশে বেশ কিছু বিষয় আলোচণার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। সেসব বিষয়গুলো তুলে ধরেছে দৈনিক পত্রিকাগুলো। সেখান থেকে আজ কিছু গুরুত্বপূর্ণ খবর তুলে ধরা হলো।

(১) বণিক বার্তা: ‘শেখ হাসিনার আমলে সম্পন্ন সব প্রকল্প ও চুক্তিই বহাল থাকবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির’

প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সম্পন্ন হওয়া সব প্রকল্প ও চুক্তি বহাল রাখার ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। পাশাপাশি যেসব প্রকল্প চলমান ও যাচাই-বাছাই পর্যায়ে রয়েছে, সেগুলো সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।

খাতসংশ্লিষ্টরা অবশ্য বলছেন, এরই মধ্যে যেসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে, সেগুলো ঠিকমতো পরিচালিত না হওয়ায় বিদ্যুৎ খাতের আর্থিক দুরবস্থা বেড়েছে।

তাই বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলোর প্রকৃত সুফল মিলছে কিনা তা নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্তে আসতে হবে বর্তমান সরকারকে।

প্রায় দেড় দশকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো বিপুল পরিমাণ আর্থিক দেনায় পড়েছে, দেউলিয়া হয়েছে বহু প্রতিষ্ঠান।

(২) কালের কণ্ঠ: ‘ছাত্র আন্দোলনে দৃষ্টিহারা চার শর বেশি মানুষ’

প্রথম পাতার এ খবরে বলা হচ্ছে,  ঢাকার শেরে বাংলা নগরে জাতীয় চক্ষু  বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ৪৫২ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী ৩জন।

প্রত্যেকেরই চোখসহ বিভিন্ন অঙ্গ পুলিশের ছররা গুলিতে আহত। কার চোখের দৃষ্টিশক্তির যে কী অবস্থা হবে সেই ভাবনাতেই দিন কাটছে তাদের। এখানে চিকিৎসা নেওয়া কয়েক শ রোগীরই যে এক চোখের আলো নিভে গেছে!

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও পরের এক দফার আন্দোলনে দেশজুড়ে পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেট ও ছররা গুলিতে কত মানুষ যে চোখে আঘাত পেয়েছে তার প্রকৃত সংখ্যা জানা হয়তো অসম্ভব।

শুধু ঢাকার দুটি হাসপাতালেই চিকিৎসা নিয়েছে হাজারের বেশি মানুষ। হাসপাতাল সূত্র জানায়, চিকিৎসা নেওয়া এসব মানুষের মধ্যে ৩৯০ জন এক চোখের দৃষ্টি হারিয়েছে। উভয় চোখের দৃষ্টি হারিয়েছে ২১ জন। গুরুতর দৃষ্টিস্বল্পতা দেখা দিয়েছে আরো প্রায় ২০০ রোগীর।

(৩) দেশ রূপান্তর: আয়নাঘরের’ সেই ১৫ কর্তা’

পত্রিকাটির প্রধান শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নিখোঁজ থাকার পর তিনজন ফিরে এসেছেন, যাদের দীর্ঘদিন কোনো হদিস ছিল না। এরপরই আবার আলোচনায় আসে ‘আয়নাঘর’।

ফিরে আসা ব্যক্তিরা গণমাধ্যমে মুখ খোলার পর জানা গেল, বাস্তবে ‘আয়নাঘর’ আছে, যেখানে গুম করে রাখা হয় এবং নির্যাতন করা হয়। ক্ষমতার পট-পরিবর্তনের পর এখন এসব ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করতে মাঠে নেমেছেন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা।

এর মধ্যে পুলিশ-র্যাব ও ডিজিএফআইয়ের অন্তত ১৫ জন শীর্ষ কর্তার নাম এসেছে। এ তালিকা আরও বাড়তে পারে বলে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে।

এই ১৫ কর্মকর্তার মধ্যে কেউ এখনো চাকরিতে আছেন, কেউ অবসরে গেছেন। কয়েকজন আছেন দেশের বাইরে।

এর মধ্যে ‘আয়নাঘর’কান্ডে সমালোচিত সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে তাকে বাহিনী থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

পুলিশ বলছে, ‘আয়নাঘর’ মূলত তৈরি হয়েছে ২০০৯ সালে। এর পেছনে কলকাঠি নেড়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক।

(৪) সমকাল: ‘ইসলামী ব্যাংকে এস আলমের ৭৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ’

প্রধান শিরোনামের এই প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, নামে-বেনামে শুধু ইসলামী ব্যাংক থেকে বের করে নেওয়া হয়েছে অন্তত ৭৫ হাজার কোটি টাকা। যার বেশির ভাগই পাচার করেছে এস আলম গ্রুপ।

সরেজমিন অনুসন্ধান, ইসলামী ব্যাংকের নথি পর্যালোচনা ও বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এমন তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে পত্রিকাটি।

বিপুল অঙ্কের ঋণ বের করতে বড় একটি চক্র গড়ে তোলেন এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক দুই গভর্নর ফজলে কবির ও আব্দুর রউফ তালুকদার নানা উপায়ে তাঁকে সহায়তা করেন।

এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কয়েকজন ডেপুটি গভর্নর, নির্বাহী পরিচালক, পরিচালকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা নানা সুবিধা নিয়ে তাঁর পক্ষে কাজ করেন।

৫ই অগাস্ট সরকার পতনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যে নজিরবিহীন বিক্ষোভ হয়, তার মূল বিষয় ছিল এস আলম গ্রুপের সুবিধাভোগী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অপসারণ। গভর্নর রউফ তালুকদার পলাতক অবস্থায় পদত্যাগ করেন।

(৫) যুগান্তর: ‘প্রাণ বাঁচাতে সেনানিবাসে ৬২৬ জনের আশ্রয়: আইএসপিআর’

প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর জীবন সংশয়ের আশঙ্কায় ৬২৬ জন দেশের বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

তাদের মধ্যে রাজনৈতিক ব্যক্তি, বিচারক ছাড়াও বড় অংশ পুলিশ বাহিনীর সদস্য বলে জানা গিয়েছে।

রোববার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আশ্রয়প্রার্থীদের মধ্যে ৬১৫ জন নিজ উদ্যোগে চলে যান।

বর্তমানে আশ্রয়প্রাপ্ত তিন জন এবং তাদের পরিবারের চার সদস্যসহ সাত জন সেনানিবাসে অবস্থান করছেন।

এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে সব তথ্য দেওয়া হয়েছে।

আইএসপিআর আরও জানায়, ৫ই অগাস্ট পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়। এ সময় প্রাণনাশের আশঙ্কায় কতিপয় রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ বিবিধ নাগরিকরা সেনানিবাসে আশ্রয় প্রার্থনা করেন।

এ পরিপ্রেক্ষিতে বিচারবহির্ভূত কর্মকাণ্ড রোধ, জীবনরক্ষা ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে ৬২৬ জনকে আশ্রয় দেয়া হয়।

তবে আশ্রয় দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্য থেকে এ পর্যন্ত চার জনকে তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ/মামলার ভিত্তিতে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

(৬) প্রথম আলো: ‘পদোন্নতি–পদায়ন নিয়ে পুলিশে অস্থিরতা’

এ খবরে বলা হয়েছে, পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে বদলি, পদায়ন, পদোন্নতি এবং এই ক্ষেত্রে বিগত সময়ে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের দৌড়ঝাঁপের কারণে একধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।

ফলে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আগের সরকারের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আত্মগোপনে চলে গেছেন। কয়েকজনকে অব্যাহতি ও অনেককে বদলি করা হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে ভেঙে পড়েছে পুলিশি ব্যবস্থা যা এখনো স্বাভাবিক হয়নি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপি সমর্থক হিসেবে চিহ্নিত করে শেখ হাসিনা সরকারের সময় পদোন্নতিবঞ্চিত বা কোণঠাসা করে রাখা পুলিশ কর্মকর্তাদের একটা অংশ পুলিশ সদর দপ্তরে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন।

তারা কাকে কোথায় বদলি করা হবে, কারা পদোন্নতি পাবেন; এ ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন।

একই সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বঞ্চিত এবং আওয়ামী লীগের কট্টর সমর্থক কর্মকর্তাদের ব্যাচভিত্তিক তালিকা তৈরি করেছে একাধিক পক্ষ। এর ফলে পেশাদার কর্মকর্তাদের অনেকে অস্বস্তি ও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

(৭) সংবাদ: ‘শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও ১০ মামলা’

প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ও সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় ঢাকাসহ সারাদেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও দশটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

শনিবার রাত থেকে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত এই মামলাগুলো দায়ের করা হয় বলে পত্রিকাটি নিশ্চিত করেছে।

এর মধ্যে  ঢাকার সূত্রাপুর থানা, মতিঝিল থানা, লালবাগ থানা, তেজগাঁও থানা এবং নারায়ণগঞ্জ থানায় একটি করে মোট পাঁচটি মামলা, রংপুরে, জয়পুরহাটে একটি ও নাটোরে একটি মামলা দায়ের হয়েছে।

এর মধ্যে ১১ বছর আগে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে গণহত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়।

এ নিয়ে রোববার পর্যন্ত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১৭ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর আগে গত চার দিনে  ঢাকায় আরো পাঁচটি মামলা দায় করা হয়। যার মধ্যে ৪টি হত্যা মামলা এবং একটি অপহরণ ও নির্যাতনের মামলা।

(৮) নয়া দিগন্ত: ‘বাতিল হচ্ছে নতুন কারিকুলাম’

পত্রিকাটির পেছনের পাতার খবরের এই প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নযোগ্য নয়। তাই পর্যায়ক্রমে এটি বাতিল করে পুরনো কারিকুলামেই ফিরবে শিক্ষা।

রোববার প্রথম কর্মদিবসে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ এ কথা জানান।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান যে শিক্ষাক্রম সেটি খুব বাস্তবায়নযোগ্য নয়। বিশেষ করে মূল্যায়ন পদ্ধতির দিক থেকে। আমরা যতদূর পারি পর্যায়ক্রমে আগের শিক্ষাক্রমে ফিরে যাবো।

তবে এমনভাবে এটি করা হবে, যাতে যেসব শিক্ষার্থী নতুন শিক্ষাক্রমে আছে, তাদের কোনো অস্বস্তি না হয়। এ জন্য পুরো শিক্ষা কারিকুলাম পরিমার্জন করা হবে।

তিনি বলেন, আমরা এমনভাবে ফিরে যাব না যে বর্তমানটার সাথে মিল থাকবে না। আগেরটায় ফিরে গেলে তারা যা পড়ে ফেলেছে তার সাথে মিল রাখতে হবে, সে জন্য অতিদ্রুত কিছু কাজ করতে হবে।

এ দিকে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর থেকেই অভিভাবক শিক্ষক ও সুশীলসমাজের পক্ষ থেকেও দাবি ওঠে নতুন এই কারিকুলাম বাতিল করার। অবশ্য পরিবর্তিত পরিস্থিতির আলোকে শিক্ষা সেক্টরেও একটি বড় পরিবর্তন আসতে পারে।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।

----- সংশ্লিষ্ট সংবাদ -----

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়