সংবাদের আলো ডেস্ক: টানা তৃতীয়বারের মতো নির্বাচনের জয়ী হয়ে ইতিহাস গড়লেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু নির্বাচন জিতলেও জোট সরকার গঠন করতে হচ্ছে তাকে। ইতিমধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন নরেন্দ্র মোদি। এবারের গঠিত সরকার কতটা কল্যাণকর হতে যাচ্ছে ভারতীয় মুসলিমদের জন্য তা নিয়ে শঙ্কিত সংখ্যালঘুরা। উগ্ৰ হিন্দুত্ববাদী মোদির জোট সরকার কোন দিকে মোড় ঘুরবে তা আন্দাজ করা বড়ই মুসকিল এই মুহূর্তে। নতুন সরকার সংখ্যালঘুদের নিয়ে কি ভাববে বা কি করবে তা আদৌ কল্যাণকর হবে কিনা তা নিয়ে একটি প্রশ্ন থেকেই যায়। এবারের নির্বাচনের কিছু দিন আগেই কার্যকর করা হয়েছিল ভারতের বহুল বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ) বলা যায়, বিশেষ এক পরিকল্পনা নিয়েই নির্বাচনকে সামনে রেখে ২০১৯ সালে পাস হওয়া আইনটি প্রায় বছর চারেক পর বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছিল মোদি সরকার।দেশটির অন্যান্য সংখ্যালঘুরা মোদির প্রতি আস্থাশীল হলেও মুসলিমরা কোনদিনই মোদির প্রতি আস্থাশীল ছিল না আর এই ধারণা থেকেই মুসলিমদের কোণঠাসা করতে এই আইনটি কার্যকর করা হয় বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তবে কি এবার ধর্মনিরপেক্ষ পরিচয় মুছে দিয়ে ভারতকে একটি হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলবেন নরেন্দ্র মোদি? নাকি মোদির চ্যালেঞ্জিং এই সময়টা মুসলিমদের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনতে চলছে সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে (সিএএ) অনিবন্ধিত হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ, পার্সি ও জৈন সম্প্রদায়ের অভিবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।কিন্তু মুসলিমদের এই আইনের আওতায় ফেলা হয়নি। কি বলা হয়েছিল সেই আইনে'? নাগরিকত্ব সংশোধন আইন ২০১৯ যোগ্যতার মানদণ্ড হলো- ১. ব্যক্তিকে অবশ্যই পাকিস্তান, আফগানিস্তান অথবা বাংলাদেশ দেশের নাগরিক হতে হবে। ২. ব্যক্তিকে হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি বা খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অন্তর্গত হতে হবে। ৩. ব্যক্তিকে অবশ্যই ৩১শে ডিসেম্বর, ২০১৪ তারিখে বা তার আগে ভারতে প্রবেশ করতে হবে। ৪. ব্যক্তির আবেদনের তারিখের ঠিক আগে একটানা ১২ মাস ভারতে বসবাস করতে হবে। ৫. ১২ মাসের আগের চৌদ্দ বছরের মধ্যে কম করে ৫ বছর ভারতে বসবাস করতে হবে। অযাচিত এই হিন্দুত্ববাদী আইনের ফলে ভারতে থাকা প্রায় ২০ কোটি অনিবন্ধিত মুসলিমদের আশ্রয়হীন হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। আশ্রয়হীন হয়ে এই মুসলিমরা কোথায় যাবে, কি তাদের ভবিষ্যৎ? হিন্দুত্ববাদী এই সরকারের অত্যন্ত বাজে এই আইনটি মুসলিমদের মধ্যে এক ধরনের উদ্বিগ্নতা তৈরি করে রেখেছে। এবার নতুন সরকার গঠনের পর মুসলিমদের ওপর চাপ কমবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও সেরকম কোন আভাস এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায় নি। জোটসরকার মুসলিমদের প্রতি কতটা সদয় হয় বা আদৌ হয় কিনা, সে ব্যাপারে উদ্বিগ্নতা নিয়ে এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষায় মুসলিমরা।
সংবাদটি শেয়ার করুন।
Copyright © 2024 সংবাদের আলো. All rights reserved.