সংবাদের আলো ডেস্ক:বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে বলেছেন, আপনারা হাসিনার পাতা ফাঁদে পা দেবেন না। টুকুর একবিন্দু রক্ত থাকতে সিরাজগঞ্জের হিন্দুদের কোনো ক্ষতি হতে দেব না। কিন্তু আজকাল কিছু আওয়ামী হিন্দু হয়েছে। তাদের মাধ্যমে ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি হাসিনাকে বলবো, এসব করে কোনো লাভ হবে না, আপনার মনের আশা পূরণ হবে না। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে কামারখন্দ উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গসংগঠনকতৃক জামতৈল ধোপাকান্দি সরকারি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, শহীদ জিয়া গণতন্ত্রে বিশ্বাস করতেন, তিনি সবাইকে রাজনীতি করার অধিকার দিয়েছিলেন। তাই আওয়ামী লীগও সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ ৭১-৭৫-এ যা করেছিল তারা গত ১৬ বছরে তার চেয়েও খারাপ করেছে। পরে তো ছেলে-মেয়ে সব নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। কিন্তু এখনো এমন কিছু আওয়ামী লীগ রয়ে গেছে। আমি শুনতে পাই, এখানেও নাকি এমন আছে এবং আমার দলের কিছু নেতার আশ্রয়ে আছে। যদি এমন হয় তাহলে তারা বিএনপি করতে পারবে না। তিনি বলেন, আল্লাহ মানুষকে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু হাসিনা এমনভাবে কথা বলতেন, যেন তিনি নিজেই আল্লাহ হয়ে গেছেন। আল্লাহ দেখিয়েছেন, হাসিনার ভাত খাওয়ারও সময় হয় নাই। আজ সবই আছে তিনি নাই, তিনি কোথায়? মাঝে মাঝে টেলিফোনে এলোমেলো কথা বলেন, হাসিনা খেলা শুরু করছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমাকে খুনি হাসিনা সিরাজগঞ্জ ও বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে একবারে সরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন আমাকে জেলে ঢুকিয়ে রাখতে। যখন আমি জেল থেকে বের হবো তখন আর আমার নির্বাচন করার ক্ষমতা থাকবে না। কিন্তু আমি বলেছিলাম, আমি হাসিনার জেলে যাব না, ইন্টারনেটের মাধ্যমে আন্দোলনের কাজ করে যাব। আজ আমি আপনাদের সামনে বক্তব্য দিতে পারছি। এ সময় আমি গভীরভাবে স্মরণ করি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সব শহীদের। সেইসঙ্গে সুস্থতা কামনা করি আহতদের।তিনি বলেন, তারা (আ.লীগ) কোটি কোটি টাকা লুটপাট করে নিয়ে গেছে। শেখ হাসিনা বলেন, “আবু সাইদের গুলি লেগেছে তাহলে রক্ত কই?” টুকু প্রশ্ন করেন, যদি আজ জয়ের (হাসিনা পুত্র) এমন গুলি লাগতো তাহলে তুমি এই কথা বলতে পারতে? সাইদের মাকে জিজ্ঞেস করো তার কলিজায় কেমন লাগছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, আমরা জনগণের ভোট ছাড়া কেউ নির্বাচিত হইনি। শহীদ জিয়া আজ নেই কিন্তু তিনি গণতন্ত্র রেখে গেছেন। এখন খালেদা জিয়ার চেয়ে বড় গণতান্ত্রিক আর কেউ নাই। আরেকজন হলেন তারেক রহমান। একসময় জিয়াউর রহমান এই শ্মশান বাংলাদেশকে সুজলা-সুফলা বাংলাদেশে পরিণত করেছিলেন। আজ তারেক রহমান ৩১ দফা দিয়েছেন, হাসিনা আবারও শ্মশানে পরিণত করে যাওয়া দেশকে সুন্দর করার জন্যই তারেক রহমানের এই ৩১ দফা।
কামারখন্দ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাতে রাব্বী উত্থানের পরিচালনায় ও কামারখন্দ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. বদিউজ্জামান ফেরদৌসের সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম।
জনসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, জেলা বিএনপির সভাপতি ও সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রুমানা মাহমুদ। বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান বাচ্চু ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল কায়েস।
জনসভায় জেলা, উপজেলাসহ বিভিন্ন ইউনিটের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন স্তরের হাজার হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদটি শেয়ার করুন।
Copyright © 2024 সংবাদের আলো. All rights reserved.