বুধবার, ২২শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

আগৈলঝাড়ায় টাকার বিনিময়ে আপোস পরে ভ্রাম্যমান আদালতে নাটক সাজিয়ে জুয়ারিদের সামান্য জরিমানার মাধ্যমে মুক্তি

আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি: বরিশালের আগৈলঝাড়ায় ১০ জুয়ারিকে টাকার বিনিময়ে আপোস, পরে ভ্রাম্যমান আদালতে নাটক সাজিয়ে জুয়ারিদের সামান্য জরিমানা করে মুক্তি। টাকার বিনিময়ে আপোস করার পুলিশের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ করে ভুক্তভোগীরা। নাম না প্রকাশ করার শর্তে আটককৃদের মধ্যে একাধিক ব্যক্তি জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১০টা ৩০ মিনিটে উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের বাকাল হাটের পশ্চিম পাশে জলিল ফকিরের ঘেড়ের পাড়ে জুয়া খেলা অবস্থায় আগৈলঝাড়া থানার এস আই সমীর রায়, এএসআই রিয়াজ ও এএসআই অনুপ কুমার বিশ্বাস নেতৃত্বে ৮ জন পুলিশের একটি দল অভিযান পরিচালনা করে জুয়ারী আমিনুল ফকির, শ্যামল দাস, শামীম ফকির, দুলাল দাস, মোস্তফা হোসেনসহ ১০ জনকে আটক করেন। পরে তল্লাশি চালিয়ে জুয়ারীদের পকেটে ও কোর্টের নগদ প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার টাকা ও এক কাটুন সিগারেট উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে জুয়াড়িদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য আরো দুই লাখ টাকা দাবি করে পুলিশ। টানা দুই ঘন্টা দর কষাকষির পরে ৭৫ হাজার টাকার বিনিময়ে জুয়াড়িদের ছেড়ে দেওয়ার সিদ্বান্ত হলেও সাংবাদিকরা জানার পরে মোবাইল কোর্টে মাধ্যমে জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়। আটককৃতদের মধ্যে একজন তার এক আত্মীয়র কাছ থেকে নগদ ৭৫ হাজার টাকা এনে পুলিশের এএস আই অনুপমের কাছে দেয়।ইতোমধ্যে বিষয়টি জানাজানি হলে এ নিয়ে পরবর্তীতে যাতে কোন ঝামেলা না হয় এই জন্য মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১ টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ফারিহা তানজিনের আদালতে তাদের উপস্থিত করে প্রত্যেককে ১ শত টাকা করে জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। নাম না প্রকাশে অনুচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার রাতে তাঁরা ওই ঘেড়ে বসে টাকার বিনিময়ে জুয়া খেলে সময় কাটাচ্ছিলেন। পুলিশ ওই ঘেড়ে অভিযান চালিয়ে জুয়ার আসরে থাকা প্রায় ১লক্ষ টাকা নিয়ে যায় এবং জুয়ারিদের আটকের পর এ এস আই অনুপম তাঁদের থানায় নিয়ে বিভিন্ন মামলায় জড়ানোর হুমকি দেয় বলে অভিযোগ আটককৃতদের। পরে জুয়ার আসর থেকে নগদ ১ লক্ষ টাকা ছাড়াও আরও ৭৫ হাজার দেওয়া হলে জুয়ারি থেকে শখের বসে তাস খেলার নাটক সাজিয়ে তরিঘরি করে রাতেই আটককৃত জুয়ারিদের ভ্রাম্যমান আদালতে হাজির করে সন্দেহ মূলকভাবে তাস খেলার জন্য আটক করা হয়েছে বলে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটকে জানালে ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারিহা তানজিন তাদের প্রত্যেককে ১শ টাকা করে জরিমানা আদায় করে মুক্তি প্রদান করেন। এ ধরনের ঘটনায় এলাকায় আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পুলিশের এসআই সমীর রায় ও অনুপম কুমার বিশ্বাস জুয়ার কোর্ট থেকে ১ লাখ ও আটককৃতদের কাছ ৭৫ হাজার টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘রাতে আমারা অভিযান চালিয়ে কয়েকজন জুয়াড়িকে আটক করি। এসময় তাদের জুয়ারকোর্ট থেকে ৫ হাজার ২শ ৬০ টাকা উদ্ধার করা হয়।উদ্ধারকৃত ৫ হাজার ২শ ৬০ টাকাসহ তাদের ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে প্রত্যেক ১শ টাকা করে মোট ১ হাজার জরিমানা রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে জানানো হলে তিনি জানান এধরনের ঘটনা ঘটলে অভিযানকারী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারিহা তানজিন সাংবাদিকদের বলেন, আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছানোর আগেই পুলিশ তাদের নিয়ে আসে। তাদের আইনের বিধিমোতাবেক বিচার করা হয়েছে। কোন পুলিশ যদি কোন সুবিধা নিয়ে থাকে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও গৌরনদী সার্কেল অফিসার শারমিন সুলতানা রাখি সাংবাদিকদের ভুক্তভোগীরা যদি কোন লিখিত অভিযোগ করে সেক্ষেত্রে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এব্যাপারে বরিশাল পুলিশ সুপার শরিফ উদ্দিনকে ফোন দিলে তা রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়