বুধবার, ২৩শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

বেনজীর এখন কোথায়

নিজস্ব প্রতিবেদক: বেনজীরের আলাউদ্দিনের চেরাগ থেকে একের পর এক সম্পদের পাহাড় বেরিয়ে আসছে। নানা রকম সম্পদের ফিরিস্তি প্রতিদিন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। তার বেশ কিছু সম্পদ সরকার জব্দও করেছে। এই সম্পদগুলো এখন সরকারের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। একজন সর্বোচ্চ পদে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা কীভাবে এত দুর্নীতিবাজ হয়ে উঠতে পারেন তা নিয়ে চলছে নানা রকম আলাপ আলোচনা চর্চা। কিন্তু যাকে নিয়ে আলাপ আলোচনা তিনি কোথায়? এ প্রশ্নের উত্তর নেই। বেনজীর আহমেদকে গত ৬ জুন দমন কমিশন তলব করেছিল। তিনি সেই তলবে হাজির হননি। তার একজন প্রতিনিধি পাঠিয়ে তিনি ১৫ দিন সময় চেয়েছিলেন। তাকে সেই সময় মঞ্জুর করা হয়েছে। ৯ জুন তার স্ত্রী এবং কন্যাদেরকে তলব করা হয়েছিল। সেখানেও তারা উপস্থিত হননি। তাদেরকেও নতুন করে সময় দেওয়া হচ্ছে।নিশ্চিত হয়েছে যে, এই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বেনজীর আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন না। বেনজীর আহমেদ এখন কোথায় আছেন? কীভাবে আছেন? বাংলাদেশের অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, বেনজীর আহমেদের পরিবার এখন দুটি দেশে অবস্থান করছেন। বেনজীর আহমেদের কনিষ্ঠতম কন্যা এখন যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। সেখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি লেখাপড়া করেছেন এবং তার পিতাকে নিয়ে এই চাঞ্চল্যকর তথ্যগুলো প্রকাশিত হবার পর তিনি কিছুটা মুষড়ে পড়েছিলেন বটে। কিন্তু এখন তিনি স্বাভাবিক রয়েছেন। তার পরিচয় গোপন রেখেই তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন। লন্ডনে বেনজীর আহমেদ তাকে একটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনে দিয়েছেন, সেখানেই বেনজীরের কনিষ্ঠ কন্যা অবস্থান করছেন।

বেনজীর আহমেদের পরিবারের বাকি সদস্যরা এখন দুবাইতে অবস্থান করছেন-এটা মোটামুটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। দুবাইয়ে বেনজীর আহমেদের কেনা অ্যাপার্টমেন্ট হাউসে পরিবারের সকল সদস্যরাই অবস্থান করেন। বেনজীর আহমেদের বড় মেয়ের জামাতা দুবাইতে ব্যবসা করেন। সেই ব্যবসার বিনিয়োগ এবং উৎস কিছুই বেনজীর করে দিয়েছেন বলে জানা গেছে।’ উল্লেখ্য যে, বেনজীর আহমেদ যখন পুলিশ প্রধান ছিলেন তখন তিনি রাজকীয় কায়দায় তার বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন।বিয়ে দেওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই তার জামাইকে দুবাই পাঠিয়ে দেন এবং দুবাইয়ে হোটেল, আবাসন সহ অন্তত তিনটি খাতে বিনিয়োগ রয়েছে বেনজীরের জামাতার।

আর বেনজীর আহমেদ যখন বুঝতে পারেন যে, সরকার তাকে যে কোন সময়ে বেকায়দায় ফেলতে পারে এবং যে কোন সময়ে তার দুর্নীতির কীর্তি কাহিনি ফাঁস হয়ে যেতে পারে, ঠিক সেই সময় তিনি তার স্ত্রী এবং কন্যাকে নিয়ে দুবাই চলে যান। কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছে যে, বেনজীর আহমেদ সিঙ্গাপুরে গেছেন। তবে অনুসন্ধান নিশ্চিত করেছে যে, বেনজীর আহমেদ সিঙ্গাপুরে যাননি। যদিও মালয়েশিয়ায় তার সেকেন্ড হোম রয়েছে। কিন্তু বেনজীর আহমেদ দুবাইতে গেছেন এবং এখন তিনি দুবাইতেই অবস্থান করছেন। সেখানে তিনি কোন বাঙালির সঙ্গে দেখা করছেন না। বাংলাদেশের কয়েকজন তার ব্যবসায়িক পার্টনারের সঙ্গে তিনি বিভিন্ন সময় যোগাযোগ রক্ষা করছেন, খোঁজখবর নিচ্ছেন।

সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে তার যোগাযোগের চেষ্টার খবর পাওয়া গিয়েছিলো। কিন্তু সকলেই এখন বেনজীর আহমেদকে এড়িয়ে চলছে। ফলে বেনজীর সেদিকেও যোগাযোগ রক্ষা করতে পারছেন না। দুবাইয়ের স্থানীয় লোকজন বলছেন যে, বেনজীর আহমেদ যে পরিমাণ সম্পদ দুবাইতে জমা করেছেন তা নিয়ে সারা জীবন তিনি চলতে পারবেন। কাজেই দেশে তার সম্পদ কতটুকু বাজেয়াপ্ত হলো সেটি নিয়ে তিনি মোটেও উদ্বিগ্ন নন। বাংলাদেশে তার যে সম্পদ জব্দ হয়েছে তার চেয়ে অত্যন্ত ১০ গুণ সম্পদ তিনি দুবাইতে করেছেন। আর এ কারণেই তিনি এখন দুবাইতে গা ঢাকা দিয়ে আছেন। দুবাইয়ের আইন অনুযায়ী এ ধরনের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না, যতক্ষণ না তিনি ওই দেশে কোন অন্যায় না করছেন।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।

----- সংশ্লিষ্ট সংবাদ -----

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়