মঙ্গলবার, ৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

বানের পানি ঘরোত উঠছে বাবা থাকার জায়গা নাই। আজ ৭দিন থাকি বান্দোত (বাঁধ) চালা তুলি  গরু ছাগোল (ছাগল) নিয়া আছি

বানের পানি ঘরোত উঠছে বাবা থাকার জায়গা নাই। আজ ৭দিন থাকি বান্দোত (বাঁধ) চালা তুলি গরু ছাগোল (ছাগল) নিয়া আছি
উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: বানের পানি ঘরোত উঠছে বাবা থাকার জায়গা নাই। আজ ৭দিন থাকি বান্দোত (বাঁধ) চালা তুলি গরু ছাগোল (ছাগল) নিয়া আছি। হামার খবর কাইও নেয় না। তোমার মত অনেক মানুষ আইসে আর খালি ফটো তুলি নিয়া যায়। কিছু দেয় না। ঘরোত খাবার নাই, হামরা কি খাই, গরু ছাগলোক ব্যান কি খোয়াই, বিপদে আছি। কথাগু‌লো বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত কু‌ড়িগ্রা‌মের উলিপুর উপ‌জেলার হাতিয়া ইউনিয়নের নীলকন্ঠ গ্ৰামের নবীর উদ্দিন (৬৭)। তার স্ত্রী, ছেলে, ছেলের বউ, নাতি-নাতনি সহ ৮জন। তিনি পেশায় দিনমজুর।
জানা গে‌ছে, গত ৭দিন ধ‌রে কু‌ড়িগ্রা‌মে ব্রহ্মপুত্র ন‌দের পা‌নি বে‌ড়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পা‌নি বৃ‌দ্ধির ফ‌লে উপজেলার ৪০ হাজার মানুষ পা‌নি‌বন্দি হয়ে পড়েছে। বিশুদ্ধ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন সমস্যার সঙ্গে গবাদিপশুর খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। পা‌নিব‌ন্দি এসব মানুষ বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র, বাঁধের রাস্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও উঁচু স্থা‌নে আশ্রয় নিয়েছে। অনেকে তা‌দের গৃহপা‌লিত পশু চুরি যাওয়ার ভয়ে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন। অনেকে আবার কম দা‌মে বি‌ক্রি কর‌তে বাধ‌্য হ‌চ্ছেন।
রবিবার (৭ জুলাই) দুপু‌রে স‌রেজ‌মি‌নে হাতিয়া ইউনিয়নের নীলকন্ঠ, কলাতিপাড়া, গাবুরজান, কামারটারী গ্ৰামে গিয়ে দেখা যায়, সব বাড়িতে বন্যার পানি ঘরে উঠেছে। এরফলে তারা আশ্রয় নিয়েছে বাঁধের রাস্তায়, বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও উঁচু জায়গায়।নবীর উদ্দিন আরও ব‌লেন, এ পর্যন্ত চাইর বার নদীতে বাড়ি ভাংগিয়া যায়। ভা‌ংতে ভা‌ংতে সংসারোত আর কিছু নাই। শেষে নীলকন্ঠ গ্ৰামোত বাড়ি করি কোন মতে আছি। এখন প্রত্যেক বছর বন্যা শুরু হইলে বাড়ি ঘরোত পানি ওঠে। এই সমস্যা যে কখন শেষ হইবে আল্লাহ্ জানে।
ওই গ্ৰামের বিবুর উদ্দিন (৫৪) জানান, বাড়িত পানি উঠছে থাকা যায় না। বাঁধোত আছি, বউ বাচ্চা নিয়া। কাজও নাই, ঘরোত খাবারও নাই। বউ বাচ্চা নিয়া এল্যা কিভাবে চলি। হামার কাইও খবরও নেয় না।কলাতিপাড়া গ্ৰামের কমেলা বেগম (৫৫), হাজেরা বেগম (৫০) জানালেন একই ধরনের কথা।হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শায়খুল ইসলাম নয়ার সাথে মুঠোফোনে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান ব‌লেন, বিষয়টি আমি খোঁজ নিচ্ছি। ইতিমধ্যে বন্যার্তদের মাঝে ৩১ মে. টন চাল, ২হাজার ৪শ প্যাকেট ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এখনো মজুদ রয়েছে ১৪ মে. টন। বন্যার্তদের জন্য  ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।

----- সংশ্লিষ্ট সংবাদ -----