দেশে বেকারের সংখ্যা ২৫ লাখ ৯০ হাজার
সংবাদের আলো ডেস্ক: দেশে বেকারের সংখ্যা ২৫ লাখ ৯০ হাজার। পুরুষ ১৭ লাখ ১০ হাজার এবং নারী ৮ লাখ ৮০ হাজার জন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপ প্রতিবেদনে এসব তথ্য-উপাত্ত উঠে এসেছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসের তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়। প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত বছরের শেষ প্রান্তিকের চেয়ে এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশে বেকারের সংখ্যা ২ লাখ ৭০ হাজার বেড়েছে। গত বছরের শেষ প্রান্তিকে বেকারের সংখ্যা ছিল ২৩ লাখ ২০ হাজার। নতুন করে বেকারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, দেশে সাধারণত শীতকালে কাজের সুযোগ কম থাকে।
বিশেষ করে কৃষি খাতে তখন কাজ কম থাকে। তবে এখন ধান কাটার মৌসুম শুরু হয়েছে। এ খাতে কাজের সুযোগ অনেক বেড়েছে। এর ফলে চলতি প্রান্তিকের প্রতিবেদনে বেকার মানুষের সংখ্যা আবার কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সংজ্ঞা অনুসরণ করে শ্রমশক্তি ও বেকারের সংজ্ঞা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। সে অনুযায়ী ১৫ বছর এবং বেশি বয়সীদের শ্রমশক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অন্যদিকে কেউ সপ্তাহে অন্তত এক ঘণ্টা মজুরির বিনিময়ে কাজ করার সুযোগ না পেলে তাঁকে বেকার হিসেবে ধরা হয়। বিবিএসের প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বেকারদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা বেশি।
আগের প্রান্তিকেও মোটামুটি একই প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। অন্যদিকে গত ২৯ মার্চ প্রকাশিত বিবিএসের শ্রমশক্তি জরিপ ২০২২ অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশে মোট বেকার মানুষের সংখ্যা ছিল ২৬ লাখ ৩০ হাজার। ওই প্রতিবেদনে বেকারত্বের হার ও সংখ্যা দুটোই আগের তুলনায় কমে আসার কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, ২০২২ সালে দেশের মোট জনসংখ্যার ৩ দশমিক ৬ শতাংশ বেকার ছিল। পাঁচ বছর আগে যা ছিল ৪ দশমিক ২ শতাংশ। গতকাল প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। নতুন প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের মোট জনসংখ্যার ৬১ দশমিক ৩৭ শতাংশ এখন শ্রমশক্তিতে নিয়োজিত। সে হিসাবে শ্রমশক্তিতে রয়েছে ৭ কোটি ৩৬ লাখ মানুষ।
এদের ৪ কোটি ৮২ লাখ পুরুষ। আর ২ কোটি ৫৪ লাখ নারী। অন্যদিকে কর্মে নিয়োজিত মানুষের সংখ্যা ৭ কোটি ১১ লাখ। এর মধ্যে ৪ কোটি ৬৫ লাখ পুরুষ আর নারীর সংখ্যা ২ কোটি ৪৬ লাখ। ‘শ্রমশক্তি জরিপের মাধ্যমে শ্রমবাজার তথ্যের উন্নয়ন’ প্রকল্পের অধীনে প্রান্তিকভিত্তিক এ শ্রমশক্তি জরিপের ফল প্রকাশ করা হলো। প্রতিবেদন প্রকাশ করে জানানো হয়, এখন থেকে নিয়মিত প্রান্তিকভিত্তিক এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সারাদেশের ৩০ হাজার ৮১৬ পরিবার থেকে এ সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
তথ্য নেওয়া হয় দৈবচয়ন ভিত্তিতে। জরিপে পাওয়া পেশাভিত্তিক কর্মসংস্থানের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, কৃষিকাজে নিয়োজিত মানুষের সংখ্যা ৩ কোটি ২০ লাখ। শিল্প খাতে রয়েছে ১ কোটি ২২ লাখ এবং সেবা খাতে ২ কোটি ৬৯ লাখ মানুষ। প্রতিবেদনে আলাদা করে দেশের যুবশক্তির কথা উল্লেখ করা হয়। এতে দেখা যায়, শ্রমশক্তির সবচেয়ে উৎপাদনশীল অংশ যুবশক্তি রয়েছে ২ কোটি ৭৩ লাখ। এর মধ্যে পুরুষ ১ কোটি ৪০ লাখ এবং নারী ১ কোটি ৩৩ লাখের কিছু বেশি।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।