টাঙ্গাইলে ৫৬ প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে ৪০ প্রার্থী জামানত খোঁয়ালেন
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল জেলার আটটি সংসদীয় আসনে মোট ৫৬ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এরমধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী পাঁচটিতে এবং ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র দুইটি ও ট্রাক প্রতীকের এক স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। আটটি আসনের ৫৬ জনের মধ্যে ৪০ জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী প্রদত্ত ভোটের এক অষ্টমাংশ ভোট না পাওয়ায় জামানত হারাচ্ছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা রিটার্নিং অফিসার মো. কায়ছারুল ইসলাম আটটি আসনের প্রার্থীদের বেসরকারি ফলাফল ঘোষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
এরমধ্যে টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে চারজন প্রার্থীর মধ্যে তিন জন প্রার্থী প্রদত্ত ভোটের এক অষ্টমাংশ অর্থাৎ ১৪ হাজার ৯২৩ ভোট না পাওয়ায় জামানত হারাচ্ছেন। তারা হচ্ছেন- বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত স্বতন্ত্র প্রার্থী খন্দকার আনোয়ারুল হক (প্রাপ্ত ভোট-৪,১৭৮), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের ফারুক আহাম্মেদ (১,৭৪২) এবং জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ আলী (৩,৬৭৪)। এ আসনে নির্বাচিত আওয়ামীলীগের প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক পেয়েছেন এক লাখ ৭৪ হাজার ১২২ ভোট। এ আসনে প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার ৪৫.২৪ ভাগ।
টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনে ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এরমধ্যে চার জন প্রার্থী প্রদত্ত ভোটের এক অষ্টমাংশ অর্থাৎ ১৪ হাজার ৮২৮ ভোট না পাওয়ায় জামানত হারাচ্ছেন। তারা হচ্ছেন- গণফ্রণ্টের গোলাম সারোয়ার (প্রাপ্তভোট-৩১২), বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির মোহাম্মদ রেজাউল করিম (৪৫১), ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টির মো. সাইফুল ইসলাম (৩০৫) এবং জাতীয় পার্টির হুমায়ুন কবির তালুকদার (প্রাপ্তভোট-৪০২)। এ আসনে নির্বাচিত প্রার্থী আওয়ামীলীগের ছোট মনির পেয়েছেন এক লাখ ৫১ হাজার ৭৩০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউনুস ইসলাম তালুকদার পান ৩০ হাজার ৪৮৬ ভোট। এ আসনে প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার ৪৬.৮৯ ভাগ।
টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে ৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে চার জন প্রার্থী প্রদত্ত ভোটের এক অষ্টমাংশ অর্থাৎ ১২ হাজার ৫১০ ভোট না পাওয়ায় জামানত হারাচ্ছেন। তারা হচ্ছেন- জাতীয় পার্টির মো. আব্দুল হালিম (প্রাপ্তভোট-৭৮৮), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মো. জাকির হোসেন (১৫০০), বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের (এমএল) মো. সাখাওয়াত খান সৈকত (২৩৪) এবং ন্যাশনাল পেপলস্ পার্টির মো. হাসান আল মামুন সোহাগ (প্রাপ্তভোট-২৫২)। এ আসনে দুই বারের সাবেক এমপি স্বতন্ত্র প্রার্থী আমানুর রহমান খান রানা ৮২ হাজার ৭৪৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামীলীগের ডা. কামরুল হাসান খান পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৩৫ ভোট। এ আসনে প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার ৪৪ ভাগ।
টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী ৯ প্রার্থীর মধ্যে ৭ জন প্রদত্ত ভোটের এক অষ্টমাংশ অর্থাৎ ১১ হাজার ১৬৬ ভোট না পাওয়ায় জামানত হারাচ্ছেন। তারা হচ্ছেন- জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের এসএম আবু মোস্তফা (প্রাপ্তভোট-২০৩), জাকের পার্টির মোন্তাজ আলী(২৬১), জাতীয় পার্টির মো. লিয়াকত আলী (৫০৩), তৃণমূল বিএনপির মো. শহিদুল ইসলাম (১৩৬), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মো. শুকুর মামুদ (১০৩), জাতীয় পার্টি-জেপির সাদেক সিদ্দিকী (১৪৭) এবং মহান স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠক প্রয়াত শাজাহান সিরাজের মেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী সারওয়াত সিরাজ শুক্লা (প্রাপ্তভোট-১০৭৮৭)। এ আসনে পাঁচ বারের সাবেক এমপি মহান মুক্তিযুদ্ধে টাঙ্গাইলের কমান্ডার ইন চিফ স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ৭০ হাজার ৯৪০ ভোট পেয়ে নির্বাচত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামীলীগের মোজহারুল ইসলাম তালুকদার পেয়েছেন ৫৪ হাজার ৭৫ ভোট। এ আসনে প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার ৩৯ ভাগ।
টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী ৯ প্রার্থীর মধ্যে ৬ জন প্রদত্ত ভোটের এক অষ্টমাংশ অর্থাৎ ১৩ হাজার ৬৬০ ভোট না পাওয়ায় জামানত হারাচ্ছেন। তারা হচ্ছেন- বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত স্বতন্ত্র প্রার্থী খন্দকার আহসান হাবীব (প্রাপ্তভোট-১৫৮৪), প্রতীক পেয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জামিলুর রহমান মিরণ(৯৭), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মো. তৌহিদুর রহমান চাকলাদার (৬৫৭), জাতীয় পার্টির মো. মোজাম্মেল হক (৫১৯১), তৃণমূল বিএনপির মো. শরিফুজ্জামান খান মহব্বত(৩১৪) এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মো. হাসরত খান ভাসানী (প্রাপ্তভোট-১০৫৪)। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ছানোয়ার হোসেন ৭২ হাজার ২৭৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামীলীগের মামুন অর রশিদ পেয়েছেন ৬৫ হাজার ৮৬৭ভোট। সিদ্দিকী পরিবারের ছোট ছেলে মুরাদ সিদ্দিকী ২০ হাজার ৭৯০ ভোট পেয়ে জামানত রক্ষা করেছেন। এ আসনে প্রদত্তভোটের শতকরা হার ৩৯ ভাগ।
টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনে ৮ প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে ৬ প্রার্থী প্রদত্ত ভোটের এক অষ্টমাংশ অর্থাৎ ১২ হাজার ৯৬০ ভোট না পাওয়ায় জামানত হারাচ্ছেন। তারা হচ্ছেন- বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির আব্দুল করিম (প্রাপ্তভোট-১২৪), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের খন্দকার ওয়াহিদ মুরাদ (১৪৮২), স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার মুহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম (৬৫৫৬), বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন (১৮৯), জাতীয় পার্টির মো. আবুল কাশেম (৬৬২৫) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহমুদুল ইলাহ (প্রাপ্তভোট-৫৮০)। এ আসনে আওয়ামীলীগের আহসানুল ইসলাম টিটু এক লাখ ১২ হাজার ৬৮৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী তারেক শামস্ খান হিমু পেয়েছেন ৩১ হাজার ২৯২ ভোট। এ আসনে প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার ৩৬.৬২ ভাগ।
টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে ৮ প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে ৬ প্রার্থী প্রদত্ত ভোটের এক অষ্টমাংশ অর্থাৎ ১২ হাজার ৬১ ভোট না পাওয়ায় জামানত হারাচ্ছেন।তারা হচ্ছেন- বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পাটির গোলাম নওজব পাওয়ার চৌধুরী (প্রাপ্তভোট-২৬৫), কৃষক শ্রমিক জনতালীগের মো. আরমান হোসেন তালুকদার (১৩৪০), নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো জাতীয় পার্টির মো. জহিরুল ইসলাম জহির(৩৬৮), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের মো. মঞ্জুর রহমান মঞ্জুর (১৫৩), জাকের পার্টির মো. মুক্তার হোসেন (৫১২) এবং বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির রূপা রায় চৌধুরী (প্রাপ্তভোট-১০৫)। এ আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী খান আহমেদ শুভ ৮৮ হাজার ৩৯৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মীর এনায়েত হোসেন মন্টু পেয়েছেন ৫৭ হাজার ২৩১ ভোট। এ আসনে প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার ৪২.০৬ ভাগ।
টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে ৬ প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে চার জন প্রার্থী প্রদত্ত ভোটের এক অষ্টমাংশ অর্থাৎ ১৩ হাজার ৩৬৯ ভোট না পাওয়ায় জামানত হারাচ্ছেন। তারা হচ্ছেন- তৃণমূল বিএনপির পারুল আক্তার (প্রাপ্তভোট-৫৬৯), বিকল্পধারা বাংলাদেশের মো. আবুল হাশেম (২১৭), বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির মো. মোস্তফা কামাল (১০৯) এবং জাতীয় পার্টির মো. রেজাউল করিম (প্রাপ্তভোট-৪৬৯)। এ আসনে আওয়ামীলীগের অনুপম শাজাহান জয় ৯৬ হাজার ৪০১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কৃষক শ্রমিক জনতালীগের বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম পেয়েছেন ৬৭ হাজার ৫০১ ভোট। এ আসনে প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার ৪২.৮৪ ভাগ।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।